একদিনে একশোর বেশি সংক্রমণ, ১০০ দিন পর নয়া রেকর্ড
গত ২৭ এপ্রিল মালদায় প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর হদিশ মেলে। এরপর কেটে গেছে ১০০ দিন, মোট সংক্রমিতের সংখ্যা এখন তিন হাজার মাইলস্টোনের পথে ছুটছে। মঙ্গলবার সংক্রমিতের সংখ্যা আগেকার যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় মালদা মেডিকেল কলেজের পরীক্ষাগারে ১২৬ জনের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ মিলেছে। এই প্রথম জেলায় দৈনিক সংক্রমণ একশোর গণ্ডী পেরিয়ে গেল।
এই পরিসংখ্যান ছেড়ে জেলার সব মহলে আলোচনায় এদিন ঘুরেফিরে এসেছে আবু নাসের খান চৌধুরির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আবু নাসের খান চৌধুরি, সম্প্রতি চেকআপ করাতে কলকাতা গিয়েছিলেন। ট্রেনে চেপে গিয়েছিলেন সেখানে। কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চলে তাঁর নিজস্ব ফ্ল্যাটে থেকে আগামীদিনে চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনার কথা জানা গেছে। কলকাতা পৌঁছে নিজের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাতেই সংক্রমণের কথা জানা যায়। সাথে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরও সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই পুলিশকর্মী জেলায় ফিরে আসার পর তাঁর করোনা টেস্ট করা হয়। তিনি এখন হোম আইসোলেশনে আছেন।
আবু হাসেম খান চৌধুরি জানিয়েছেন, কোনও উপসর্গ নেই দাদার, বয়সের কথা ভেবেই দাদাকে হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। ট্রেনে চেপে কলকাতা যাওয়ার পথে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন তিনি।
এদিকে কোতোয়ালিতে গনি পরিবারের বাসভবনে এক রাঁধুনি আক্রান্ত হয়েছেন। এই ভবনেই থাকেন রাজ্যসভার সাংসদ ও জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর, দক্ষিণ মালদার সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি, সুজাপুরের বিধায়ক ইশা খান চৌধুরি ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আবু নাসের খান চৌধুরি৷ মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের সাবধানতায় গত কয়েকমাস এই ভবনে বহিরাগতদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল৷ খুব পরিচিত ছাড়া কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় জেলায় সংক্রমণের হার ছিল ২১.৪৭ শতাংশ। এই সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট নির্ধারিত হয় দৈনিক টেস্ট ও আক্রান্তের সংখ্যার শতকরা বিচারে। স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার মালদা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে ২০৪ জন ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে আটজনের রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ মিলেছে। গতকাল আরটি পিসিআর ল্যাবরেটরিতে রাত ১১টা পর্যন্ত হওয়া মোট ৯৩১টি টেস্টের মধ্যে মালদা জেলার ৬৪৬ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। এরমধ্যে মালদা জেলায় ১২০ জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সাথে দক্ষিণ দিনাজপুরের ৮৪ জন সংক্রমিত। মালদা জেলার মোট আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন পুরোনো আক্রান্ত, যাদের দ্বিতীয়বারের পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। সাথে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছিল ৭২টি। স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মালদা মেডিকেল কলেজের ল্যাবরেটরিতে এখন মোট লালারসের পরীক্ষা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে চার হাজার ৭১টি লালারসের নমুনার করোনার সন্ধান মিলেছে।
[ আরও খবরঃ আক্রান্ত ৫৩, ইংরেজবাজারে ওয়ার্ডভিত্তিক শুরু হয়েছে অ্যান্টিজেন টেস্ট ]
গতকাল সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের কোভিড-১৯ হেলথ বুলেটিনে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেল, জেলার প্রায় ৮০ শতাংশ কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তি এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মালদা জেলার মোট সংক্রমিত দুই হাজার ৬০৬ জন। তবে এরমধ্যে দুই হাজার ৬৭ জন ব্যক্তি ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে নতুন আক্রান্তদের বাদ দিয়ে ৪ অগস্ট পর্যন্ত জেলায় অ্যাক্টিভ কেস ৫২৪টি। জেলায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু ১৫ জনের।
টপিকঃ #CoronaVirus