top of page

করোনায় কড়িতে টান, পুজোয় তাল কেটেছে মজলিশের

হাতেগোনা আর কয়েকদিন। তারপরেই শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে উঠবে আপামর বাঙালি। করোনা আবহেই এবার পুজো হচ্ছে। প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে জোর কদমে। তবে গাজোলের মজলিশবাগের ছবিটা একদম ভিন্ন। ওই গ্রামের সমস্ত মানুষ চাষবাসের পাশাপাশি হস্তশিল্পের কাজে যুক্ত। প্রতিবছর এই মজলিশবাগের কারুশিল্পীদের তৈরি শিল্পকলা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন কোনাতেও হস্তশিল্পের প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। পুজো উদ্যোক্তারা এই শিল্পের খোঁজে ছুটে আসেন দূরপ্রান্ত থেকে। তবে এবছর করোনা আবহে পুজো উদ্যোক্তারা সেভাবে সাড়া দেননি। কোনোমতে একটা কাজ পেয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। আর্থিক উপার্জনের পাশাপাশি নিজেদের শিল্প তুলে না ধরতে পারায় মুখভার ওই এলাকার শিল্পীদের।

ওই এলাকার এক শিল্পী জানান, এই গ্রামের প্রতিটি মানুষ আদিবাসী। চাষবাসের পাশাপাশি সকলেই বাঁশের শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এই এলাকার বাঁশের কাজের সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে। প্রতিবছর পুজোর সময় বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তারা নিজেদের মণ্ডপসজ্জার সম্পূর্ণ দায়িত্বভার এই শিল্পীদের তুলে দেন। পুজোর আগের তিনমাস সকলেই এই শিল্পে ব্যস্ত থাকে। তবে এবছর ছবিটা পুরো আলাদা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র কলকাতার একটা পুজো কমিটি কাজের দায়িত্ব দিয়েছে। আপাতত সেই কাজই চলছে। কিন্তু প্রতিবছর এই সময় তাঁদের বেশ কিছুটা উপার্জন হয়ে থাকে। এই কাজের ওপরেই ভরসা করে তাঁদের বেশ কয়েকমাসের অন্ন সংস্থান হয়ে যায়। কিন্তু এবছর আর সেরকম হচ্ছে না। আরও দুঃখের বিষয় অন্যান্য বছর তাঁদের শিল্প দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছয়। বহু মানুষের কাছে তাঁদের শিল্প ফুটে ওঠে এবছর তাও হচ্ছে না।



আরেক শিল্পী বলেন, এবছর মাত্র একটা কাজ পেয়েছি। কলকাতার মাস্টারদা সূর্য সেন ক্লাব একটা ছোটো মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়েছে। সেই কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এই কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরে আর কোনও কাজ থাকবে না। যা পরিস্থিতি চলছে তাতে কালীপুজোতেও হয়তো কাজ জুটবে না।




প্রায় ৩০ বছর ধরে পান্ডুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত মজলিশবাগ গ্রামের প্রায় শ-তিনেক কারুশিল্পী বংশপরম্পরায় এই কাজ করে চলেছেন। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও কাজে হাত লাগান। বাঁশের তৈরি ঘর সাজানোর উপকরণ বানানোর পাশাপাশি প্রতিবছর প্যান্ডেলের বরাত ঢুকলেই পুজোর অনেক আগে থেকেই শিল্পীরা মেতে উঠেন বাঁশের শিল্পকর্ম নিয়ে। মজলিশের ক্যাপটেন শিল্পী সনাতন টুডু। মূলত তাঁর পরিচালনাতেই গ্রামের শিল্পীরা প্রতি বছর নানান পুজো মণ্ডপের থিম গড়ে তোলেন। তিনি বলেন, করোনা হানায় হস্তশিল্প বিক্রি করার বাজারটা বন্ধ হয়ে গেছে। তাঁর উপর এবছর পুজোতে কোনো উদ্যোক্তার দেখা নেই। দিশেহারা এই শিল্পীরা এখন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page