গঙ্গা ভাঙন শুরু, আতঙ্কে কালিয়াচক
বর্ষাকালে নদী ভাঙন মালদা জেলার অন্যতম প্রধান সমস্যা। জেলায় এই মরশুমের প্রথম গঙ্গা ভাঙন শুরু হয়েছে । গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কালিয়াচক-৩ ব্লকের পারলালপুর ও পার অনুপনগর এলাকায় গঙ্গা ভাঙন চলেছে। ইতিমধ্যে ওই দুই গ্রামের মধ্যবর্তী কেশবপুর গ্রামে পাথরের বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো প্রায় ১০০ মিটার গঙ্গার নতুন পাড় নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েক বিঘা কৃষিজমিও গঙ্গাগর্ভে চলে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন নদী ভাঙন বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। তবে প্রশাসনের তরফে এই ভাঙন তেমন উদ্বেগের নয় বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকে গঙ্গার ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। গঙ্গার ভাঙনে গত বছরও তলিয়ে গিয়েছিল ৫০০টিরও বেশি বাড়ি, প্রচুর কৃষিজমি, মন্দির, স্থানীয় পোস্ট অফিস, এমনকি একটি প্রাথমিক স্কুলও। বাদ যায়নি স্থানীয় বিধায়কের বসতবাড়িটিও। এলাকার বাসিন্দারা গঙ্গার স্থায়ী ভাঙন রোধের কাজের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরব হয়েছেন। ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের চাপানউতোরে সেই কাজ শুরু হয় অনেক বিলম্বে। জেলাপরিষদের বরাদ্দ অর্থে কিছুদিন আগে পাথরের বোল্ডার দিয়ে গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভাঙন রোধের জন্য যে ঠিকাদার সংস্থা এই কাজের বরাত পেয়েছে, তারা ঠিকমতো কাজ করছে না। অভিযোগ ভাঙন রোধের জন্য বোল্ডার বেড যতটা দূরত্ব পর্যন্ত করা প্রয়োজন, তা করা হচ্ছে না। এই অভিযোগ তাঁরা আগেই প্রশাসনের কাছে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। তাঁরা যে পুনরায় ভাঙনের আশঙ্কা করেছিলেন তাঁদের সে আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সঠিক প্রমাণিত হয়েছে। গত বুধবার থেকেই গঙ্গার জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে ভাঙন শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু কৃষিজমি সহ নতুন বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। জলে রয়েছে ঘূর্ণি, সেই সঙ্গে জলের পরিমাণ বেড়ে চলার প্রবণতা। এমন অবস্থা চলতে থাকলে নদী ভাঙন আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মানুষজনেরা।
জেলা সেচ দপ্তরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণবকুমার সামন্ত জানিয়েছেন, কালিয়াচক-৩ ব্লকের কেশবপুর নামে একটি পয়েন্টে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে বলে তাঁরাও জানতে পেরেছেন। তবে গঙ্গার জল এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। সেই সঙ্গে ফুলহর ও মহানন্দার জল কমছে। ফলে এখনই তেমন চিন্তার কিছু নেই। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে, কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বিডিও খোকন বর্মন আগামীকাল ভাঙন এলাকা পরিদর্শনের জন্য একটি সরকারি প্রতিনিধি দল পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
Comments