গঙ্গায় মিশে যেতে পারে ফুলহর, বাজছে বিপদ ঘণ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদন
- Sep 10, 2020
- 2 min read
Updated: Jan 12, 2021
একদিকে উত্তাল ফুলহর, আরেকদিকে আগ্রাসী গঙ্গা- দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে ক্রমশ মালদার মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে মহানন্দটোলা-বিলাইমারির হাজার হাজার পরিবার। দিনেরাতে প্রতিদিনই বিঘার পর বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটেমাটি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে অগণিত মানুষ। একসময় গঙ্গা আর ফুলহরের দূরত্ব ছিল প্রায় ২৫ কিলোমিটার। কিন্তু পাড় ভাঙতে ভাঙতে সেই দূরত্ব এখন কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র দেড় কিলোমিটারে। এই ব্যবধানটাও যেকোনো দিন দূর হয়ে যেত পারে। আর এমনটা হলে গঙ্গা ও ফুলহর মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন মহানন্দটোলার বাসিন্দা পরাণ মণ্ডল।
মহানন্দটোলার বেশ কিছু জনপদ ইতিমধ্যেই তাদের অস্তিত্ব হারিয়েছে। জাফরহাজিটোলা বা জঞ্জালিটোলা গ্রামগুলির চিহ্ন এখন কার্যত খুঁজে পাওয়াই যাবে না। বছরের পর বছর ক্রমশ এগিয়ে এসেছে গঙ্গা। জমি-বাড়ি কেটে গিলে নিয়েছে। প্রতি বছর একই দুর্দশার চিত্র এখানে ঘুরেফিরে আসে। ইদ চলে গিয়েছে, সামনেই পুজো। কিন্তু বিষাদের কালো ঘন ছায়া সব সময়েই ঢেকে রাখে গঙ্গা ও ফুলহর পাড়ের হাজার হাজার পরিবারকে।
দু'বছর আগেও যেখানে জঞ্জালিটোলার অস্তিত্ব দেখা যেত, আজ সেখানে উথালপাতাল গঙ্গা আরও আগ্রাসী রূপ নিয়ে বয়ে চলেছে। দূরে রাজমহল পাহাড়ের গায়ে গঙ্গার জল আছাড় খেয়ে আবার এদিকেই ধেয়ে আসে। আর গিলে নেয় মোস্তাফা-রাজুদের সব স্বপ্ন। সর্বস্ব হারিয়ে আজ তারা প্রকৃত অর্থেই সর্বহারা।
[ আরও খবরঃ আত্মীয়ের বাড়িতে এসে গ্রেফতার বাংলাদেশি ]
এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ড. সুপ্রতিম কর্মকার। তাঁর বক্তব্য, কোশি নদীর জল হুহু করে ফুলহরে ঢুকছে। ফলে একটা সময় যে ফুলহর প্রায় মরে গিয়েছিল, সেই নদীই আজ ফুলেফেঁপে বিধ্বংসী আকার নিয়েছে। তার ওপর ফুলহর যদি গঙ্গার সাথে মিশে যায়, তাহলে তো আর কিছু বাঁচানো যাবে না। এই এলাকায় ভাঙন আটকানো খুবই কঠিন। বৈষ্ণবনগরের যে সব এলাকায় ভাঙন হচ্ছে বা গঙ্গার ওপারে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা-সামশেরগঞ্জে যে সব অঞ্চলে মাটি কাটছে, সেখানকার পরিস্থিতিটা রতুয়ার থেকে আলাদা। সেই এলাকায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে বাঁধ দিলে ভাঙন কিছুটা হলেও রোখা যাবে। কিন্তু মহানন্দটোলার মতো এলাকাগুলো বাঁধ দিয়ে টিকিয়ে রাখা যাবে না। পুরো এলাকাটাই গঙ্গা-ফুলহরের মাঝে এখন দ্বীপ হয়ে আছে।
এবার ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়েছে মালদার বৈষ্ণবনগরেও। উলটো দিকের ফরাক্কাতেও গঙ্গাগর্ভে প্রায় প্রতিদিনই ভিটেমাটি, আবাদি জমি-সব কিছুই চোখের সামনে তলিয়ে যাচ্ছে। বছর ঘোরে, ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু ভাঙনদুর্গতদের দুর্দশা আর ঘোচে না।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
תגובות