মৃত্যুর পরও দেহ নিয়ে চলল ঝাড়ফুঁক, চাঞ্চল্য
সাপের কামড়ে মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু যুবকের। মৃত্যুর খবর শুনে জোর করে মেডিকেল কলেজ থেকে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে ওঝাকে ডেকে চলতে থাকে ঝাড়ফুঁক। খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পুরাতন মালদা ও মেডিকেল কলেজ চত্বরে।
মৃত যুবকের নাম মিঠুন মণ্ডল (২৩)৷ বাড়ি পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রামপঞ্চায়েতের চর কাদিরপুর গ্রামে৷ মিঠুন গৌড় কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে ঘুমন্ত অবস্থাতেই মিঠুনের ডান হাতের উপরের অংশে ছোবল দেয় বিষধর সাপ। তীব্র জ্বালায় ঘুম ভেঙে যায় মিঠুনের৷ ঘর থেকে সাপটিকে বেরোতেও দেখেন মিঠুন। পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মিঠুনকে মৃত বলে ঘোষণা করে মৃতদেহের ময়নাতদন্তের কথা বলেন। অভিযোগ, এরপরেই মেডিকেল কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি করে মৃতদেহটিকে বাড়ি নিয়ে চলে যান পরিবারের লোকজন। স্থানীয় এক ওঝাকে ডেকে চলতে থাকে ঝাড়ফুঁক। রাস্তার ধারে এমন ছবি দেখে নিমেষে এলাকায় ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে মালদা থানার পুলিশ। পরিবারের লোকজনকে বুঝিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
মিঠুনের বাবা ভরত মণ্ডল জানান, ছেলেকে বাঁচাতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও ডাক্তাররা ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি৷ তাই ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে এনে ওঝাকে দিয়ে শরীর থেকে বিষ ঝাড়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুভাষ মণ্ডল জানান, ভোর চারটে নাগাদ ছেলেটিকে বিষাক্ত সাপ কামড়েছে৷ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ছেলেটিকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু তারপরেও পরিবারের লোকজন হাসপাতাল থেকে দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে এনে ঝাড়ফুঁক করছে৷ এই যুগে এমন ঘটনা কাম্য নয়৷
মালদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় জানান, রোগীর মৃত্যুর পর স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে তিনি শুনেছেন। পুলিশ পরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উদ্ধার করে নিয়ে এসেছে। নিগৃহীত স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিযোগ জানালে বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে৷
[ আরও খবরঃ পাচারের আগেই ৩৯ লক্ষ টাকার মোবাইল উদ্ধার বিএসএফের ]
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comentários