করোনাকে হালকা নেবেন না
করোনা তো চলে গেছে বাবু, এখন আর মাস্ক পরে কী হবে? রিকশাওয়ালার প্রশ্নটা যেন ঝড়ের গতিতে উড়ে বেড়াচ্ছে শহরে। মকদুমপুর বাজার হোক বা বিচিত্রা মার্কেট, দোকানদারদের মুখ থেকে মাস্ক নেমে গেছে। সবজিওয়ালাদেরও একই অবস্থা। ক্রেতাদের মধ্যে তবু মাস্ক পরে বাজারে ঢুকতে দেখা যাচ্ছে কাউকে কাউকে। কিন্তু রাস্তাঘাটে চোখ ঘোরালেই মনে হবে, পরিস্থিতি বুঝি সব স্বাভাবিক হয়ে গেছে।
মালদা মেডিকেলের ভিআরডিএল থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, জেলায় সংক্রমণের হার কমছে। ২৪ তারিখ রাতের রিপোর্ট বলছে, মালদায় মাত্র ২২ জনের লালারসের নমুনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ২০২ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে এই ২২ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। করোনার প্রকোপ যে কমছে, এটাই প্রমাণ বলে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন।
মালদা জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের দেওয়া পরিসংখ্যানে অন্তত মনে হচ্ছে, সংক্রমণের হার কমছে। আর তার সঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটা। গত কয়েকদিন মালদা মেডিকেল কলেজ থেকে পাওয়া রিপোর্ট দেখলে অন্তত এমনটাই মনে হবে। এক সময় যে জেলায় দিনে একশোরও বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছিল, এখন সেই মালদাতেই করোনা সংক্রামিতের সংখ্যাটা দিনে পঞ্চাশেরও নীচে নেমে গেছে।
[ আরও খবরঃ মানিকচক বিস্ফোরণ কাণ্ডে আটক ভুতনির যুবক ]
২২ তারিখ রাতে মালদা মেডিকেলের ভিআরডিএল থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এই জেলায় ৪২৪ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। তা থেকে ৪৪ জনের পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তার আগের দিন অর্থাৎ ২১ তারিখ রাতে মেডিকেলের ল্যাব রিপোর্ট বলছে, ৩৮৬ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে মাত্র ১১ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এই সংখ্যাতত্ত্ব কি সত্যিই করোনা থেকে রেহাই মেলার ইঙ্গিত দিচ্ছে। চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, সংক্রমণের হার কমছে ঠিকই, কিন্তু গা-ছাড়া মনোভাব মোটেও ভালো নয়।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তীর বক্তব্যটা স্পষ্ট, মালদা মেডিকেলে এক লাখের বেশি লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু এতে থেমে থাকলে হবে না। আরো পরীক্ষা প্রয়োজন। সংক্রমণের হার এখন কমেছে। তবে এখনই নিশ্চিন্ত হওয়া উচিত নয়। আরো পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। সতর্কও থাকতে হবে। আর সতর্ক থাকতে হলে মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে। সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা, স্যানিটাইজারের ব্যবহার এখনো দরকার রয়েছে।
সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী দেখালেও আক্রান্তদের মধ্যে হেভিওয়েটদের নাম উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। দিন কয়েক আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মালদার অতিরিক্ত পুলিশসুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার। আর আজ হবিবপুরের বিডিওর শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। উদ্বেগটা এখানেই।
[ আরও খবরঃ পুজোর ‘নিউ নর্মালে’ পাট চুকেছে চাঁদার ]
পুজো আসছে। বাঙালির সেরা উৎসবে করোনা সংক্রমণের ঢেউ আর রাস্তায় মানুষের ভিড় সামলানোর দায়িত্ব থাকে মূলত পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর। কিন্তু তাঁরাই যদি করোনার কবলে পড়তে থাকেন, তাহলে সমস্যা তৈরি হতেই পারে। তাছাড়া শহরের রাস্তায় মাস্ক ছাড়া বেপরোয়া মানুষের ভিড় যেভাবে বাড়ছে, তাতেও উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরা।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
টপিকঃ #CoronaVirus