জুয়ার আসর, চটুল নাচের প্রতিবাদ করে আক্রান্ত যুবক
গত কয়েক বছরে মদ, জুয়া আর চটুল নাচের আসরের একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে হরিশ্চন্দ্রপুরে। অভিযোগ, সমস্ত কিছু জানার পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয় না। এনিয়ে এবছর আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছিল স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার রাতে গ্রামের কালীমন্দিরে এনিয়ে বৈঠক বসে৷ তাতে অংশ নেয় মোট পাঁচটি পাড়া৷ গ্রামবাসীদের একাংশ এবং চটুল নাচ আর জুয়ার আসর না হওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন৷ পালটা আসর হওয়ার পক্ষেও মত দেন অনেকে। এনিয়ে বৈঠকে ঝামেলা শুরু হয়। সেই সময় প্রতিবাদী এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে এলাকার তৃণমূল নেতা। এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বেশ কয়েক বছর ধরেই চটুল নাচ, জুয়ার আসর বসার অভিযোগ উঠে আসছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এনিয়ে ইতিমধ্যে একাধিকবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় লোকজন। কিন্তু এসবের পেছনে শাসকদলের মদতপুষ্ট লোকেদের হাত থাকায় কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফের একবার যাতে এধরণের আসর না বসে তা নিশ্চিত করতে, এবার আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন এলাকার লোকজন। মঙ্গলবার রাতে কালীপুজো নিয়ে গ্রামের কালীমন্দিরে বৈঠক বসে৷ অভিযোগ, সেই সময় বৈঠকে থাকা তৃণমূল নেতা অবিনাশ দাস ও তাঁর ভাই প্রিন্স দাস এক প্রতিবাদী যুবক প্রীতম সাহাকে লোহার পাঞ্জা দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন৷ স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় প্রীতমকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটিতে রেফার করা হয়৷
প্রীতমের মা রেখা সাহা জানান, মিটিংয়ে আমরা অশ্লীল নাচ-গান আর জুয়ার আসরের বিরোধিতা করেছিলাম। তাই অবিনাশ আর তার ভাই প্রিন্স আমার ছেলেকে মেরেছে৷ ওদের মদত দিচ্ছে তৃণমূলের নেতারা৷ ওরা রাস্তাতে মারধর, এমনকি খুনের হুমকি দিচ্ছে৷ আমরা আতঙ্কে রয়েছি৷ আমরা ওদের শাস্তি চাই৷
এর আগেও হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসককে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল অবিনাশ দাসের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবারের ঘটনা নিয়ে তাঁর দাবি, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে৷ সেদিন তিনটি পাড়া একদিকে ছিল৷ বৈঠকে নাচ-গান আর জুয়ার আসর না বসানোর পক্ষে একটি পাড়া মত দেয়৷ তবে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা তারা এখানকার কমিটিকে না বলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় জানায়৷ এটা নিন্দনীয় বিষয়৷ সেদিন মিটিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওরাই আমাদের উপর হামলা চালায়৷ তার ভিডিয়ো ফুটেজ রয়েছে৷ ওই ছেলেকে কে মেরেছে আমরা জানি না৷
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় উভয় পক্ষের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
コメント