তুর্তিপুর ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি
top of page

তুর্তিপুর ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে মৃতের বাবা-মা

একের পর এক ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের খবর সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে প্রতিদিন। এই নির্যাতন রুখতে এগিয়ে এল মালদা জেলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এদিন ওই সংগঠনের নেতৃত্ব, নবম শ্রেণির ছাত্রীর খুনে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তোলে৷ নেতৃত্বের দাবি, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুলিশ সুপার৷


উল্লেখ্য, নবম শ্রেণির ধর্ষিতা এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় গত ২৭ জুন তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় কালিয়াচক ২ ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তুর্তিপুর গ্রামে৷ খবর পেয়ে স্থানীয় মোথাবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায়৷ এই ঘটনায় এলাকার এক কুখ্যাত যুবক সহ মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে মৃত ছাত্রীর পরিবার৷ তার মধ্যে ওই কুখ্যাত যুবকের বিরুদ্ধেই মৃত ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল৷


অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে জেলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন৷ মৃতের বাবা-মাও এদিন পুলিশ সুপারের দপ্তরে মেয়ের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে আসেন৷

মৃত ছাত্রীর বয়স ১৭ বছর৷ স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত সে৷ গত ২৩ জুন মোথাবাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করে ওই ছাত্রী জানায়, তার আগের দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রেজাউল শেখ নামে এক যুবক বাড়ির সামনে এসে তাকে ডাকে৷ জানালা দিয়ে সে তার সঙ্গে কথা বললে রেজাউল তাকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে৷ সে তার কথামতো বাড়ির বাইরে এলে রেজাউল ছুরি দেখিয়ে তাকে জোর করে সেখান থেকে একটু দূরে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণ করে৷ ঘটনার কথা কাউকে বললে রেজাউল তাকে খুন করার হুমকিও দেয়৷ সে আগে বুঝতেই পারেনি রেজাউল তাকে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের বাড়িতে এসেছিল৷ অজ্ঞান অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাতে সে সব কথা অভিভাবকদের খুলে বলে৷ পরদিন সে নিজেই রেজাউলের বিরুদ্ধে মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করার পরেই রেজাউল ধর্ষিতা ছাত্রী ও তার পরিবারকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছিল৷ অভিযোগ না তোলা হলে সে ওই ছাত্রীকে খুনের হুমকিও দেয়৷ এদিন সকালে বাড়ির একটি ঘরে অ্যাসবেস্টাসের চাল থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের মানুষজন৷ খবর পেয়ে পুলিশকর্মীরা এসে দেহটি উদ্ধার করেন৷

ওই ছাত্রীর এক আত্মীয় গোটা ঘটনার পিছনে রেজাউলেরই হাত দেখতে পাচ্ছেন৷ তাঁর দাবি, আত্মহত্যা নয়, তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে রেজাউল৷ অভিযোগ দায়েরের পর থেকে রেজাউল ও তার দলবল অভিযোগ তুলে নেওয়ার চাপ দিয়ে প্রতিদিনই ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে মারধর করত৷ ভয়ে কয়েকদিন থেকেই ওই ছাত্রীর ৪ ভাইবোন তাঁর বাড়িতে ছিল৷ ২৭ জুন সকালে রেজাউল ফের দলবল নিয়ে সেখানে চড়াও হয়৷ তাদের হাতে পিস্তল-ছুরি ছিল৷ তারা ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢোকে৷ এরপর শ্বাসরোধ করে খুন করার পর মেয়েটিকে ঘরের চাল থেকে ঝুলিয়ে দেয়৷ তবে এই ঘটনার জন্য পুলিশকেও দায়ী করেছে মৃতের পরিবারের লোকজন৷ তাঁদের বক্তব্য, ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও পুলিশ রেজাউলকে গ্রেফতার করতে কোনও সদর্থক ভূমিকা নেয়নি৷ সেকারণেই এমন বেঘোরে প্রাণ দিতে হল জলজ্যান্ত একটি মেয়েকে৷

অভিযোগ, এত কিছুর পরেও অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ৷এই ঘটনার পিছনে পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের যোগাযোগেরও অভিযোগ উঠেছে এলাকায়৷ এদিন অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে জেলার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন৷ মৃতের বাবা-মাও এদিন পুলিশ সুপারের দপ্তরে মেয়ের দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে আসেন৷ মা জানান, গতকাল থেকে তাঁদের ফের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে৷ তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page