হস্টেলে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু, রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে পরিবার
আরজিকর মেডিকেলে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তোলপাড় রাজ্য। জনরোষ আছড়ে পড়েছে রাস্তায়। এরই মধ্যে তৃণমূল বিধায়কের ফার্মাসি কলেজের হস্টেলে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পনামাফিক প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে খুন করা হয়েছে। পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার চিন্তাভাবনা পরিবারের।
মৃত ছাত্রের নাম তোহিদ করিম৷ বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামে৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত মিয়াঁপুরে তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেনের ফার্মাসি কলেজে পড়াশোনা করতেন তোহিদ। গত ১৩ অগস্ট এই কলেজেরই হস্টেল থেকে উদ্ধার হয় তোহিদের মৃতদেহ৷ তোহিদের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তবে তোহিদের মৃত্যুর দীর্ঘসময় পরেও পরিবারের লোকেদের খবর না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকজন।
তোহিদের বাবা রেজাউল করিম জানান, ১৩ তারিখ আমার রঘুনাথগঞ্জের দিকেই লরি নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল৷ তাই স্ত্রীকে বলেছিলাম, ছেলের কিছু প্রয়োজন থাকতে তা নিয়ে যাব। আগের রাতে স্ত্রী ছেলের সঙ্গে কথা বলে৷ ছেলে কিছু জিনিস চেয়েও পাঠায়। পরদিন সকালে স্ত্রী ছেলেকে ফোন করলেও ছেলে ফোন ধরেনি। মনে হয়েছিল ছেলে ব্যস্ত রয়েছে, পরে ফোন করবে। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত ছেলে ফোন না করায় স্ত্রী আমাকে ছেলের কাছে যেতে বলে। কাজ শেষ করে রাত নটা নাগাদ ছেলের কলেজের দিকে রওয়ানা দিই। তার আগে হস্টেল সুপারের থেকে দেখা করার অনুমতি নিই। কলেজে পৌঁছতেই স্ত্রী ফোন করে বলে, ছেলে নাকি মারা গিয়েছে। ছেলের এক রুমমেট হস্টেলের তিনতলায় নিয়ে যায়। সেখানে ছেলের মৃতদেহ মেঝেতে শোওয়ানো অবস্থায় দেখি। অথচ হস্টেল সুপার এনিয়ে আগে কিছু জানাননি। ছেলের শরীরে চোটের দাগ ছিল। বাম চোখে রক্ত জমে ছিল। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। আত্মীয়স্বজনদের ডেকে আমরা থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। থানার মেজবাবু ময়নাতদন্তের পর অভিযোগ জমা নেওয়ার কথা বলেন। এমনকি ময়নাতদন্তের সময় আমাদের ডাকার কথা বলা হলেও আমাদের ডাকা হয়নি। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা না বলার পরামর্শ দেওয়া হয়। আজ থানার এসআইয়ের কাছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানতে চাইলে, ফোনে হুমকি দেওয়া হয়।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সেনাউল ইসলাম জানান, পরিকল্পনা করে তোহিদকে হস্টেলে খুন করা হয়েছে৷ এখনও পুলিশ পরিবারের অভিযোগ জমা নেয়নি৷ ওই কলেজটি জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের৷ তিনি নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুলিশকে অভিযোগপত্র জমা নিতে দেননি৷ এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে৷ মনে হয়, সেদিন তোহিদের বাবা না গেলে হয়তো মৃতদেহ উধাও করে দেওয়া হত৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments