ধামসা মাদলের বোলে সহরায় উৎসব
top of page

ধামসা মাদলের বোলে সহরায় উৎসব

ওঁরা আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ৷জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন গ্রামে তাঁদের বাড়ি৷কিন্তু কর্মসূত্রে তাঁরা বর্তমানে জেলার ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদা এই দুই পুরসভা এলাকায় বসবাস করছেন৷বর্তমানে এইরকম পরিবারের সংখ্যা প্রায় ২৫০৷এই আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড়ো উৎসব হল বাদনা পরব বা সহরায় উৎসব৷ছয়দিনের এই উৎসব গ্রামে গিয়ে পালন করা সম্ভব না হওয়ায় এই বছর তাঁরা খোদ ইংরেজবাজারের রথবাড়ি এলাকায় পালন করলেন৷আয়োজক ছিল মালদা আদিবাসী রিক্রিয়েশন ক্লাব৷এটি মূলত প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা জানানোর উৎসব৷সহরায় পরবে পাঁচটি বিশেষ দিন- উম, দাকা, খুনটাও, জালি ও সাকরাত৷


Sohoray Utsav

সহরায়ের প্রথম দিন - উম


এই দিনে গ্রামের পুরুষরা সকালে স্নান করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করে গ্রামের এক প্রান্তে মারাংবুরু-র উদ্দেশ্যে হাঁড়িয়া ও মুরগি উৎসর্গ করে৷তারপর সেই মুরগি রান্না করে গ্রামের সকলে মিলে খিচুড়ি বানিয়ে খাওয়াদাওয়া করে দিনের শেষে ‘গড়’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সহরায়-এর শুভ সূচনা ঘটে৷

দ্বিতীয় দিন - দাকা


এই দিনে গ্রামের বাড়িতে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়৷বাড়িতে আত্মীয় পরিজনদের ‘সান্দিশ’ সহ আগমন ঘটে৷এই দিনে মূলত আত্মীয় পরিজনদের নিয়েই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়ে থাকে৷

তৃতীয় দিন - খুনটাও


এই দিনে বাড়ির গৃহপালিত পশুর বন্দনা করা হয়ে থাকে৷ গ্রামের পুরুষরা এই দিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গৃহপালিত পশুদের বিন্তি, বাঁঘেড় (একপ্রকার বন্দনা) দ্বারা ‘জাগাও’ করে৷গৃহপালিত পশুদের তেল ও সিঁদুর মাখানো হয়৷

চতুর্থ দিন হল জালি


এই দিনটি হল সহরায় উৎসবের সবচাইতে আনন্দের দিন৷এই দিনে গ্রামের পুরুষ ও মহিলারা একসঙ্গে প্রত্যেকের বাড়িতে হাজির হয়৷সেখানে চলে খাওয়াদাওয়া এবং ধামসা ও মাদলের সহযোগে নাচ ও গানে প্রত্যেকে মেতে ওঠে৷

পঞ্চম দিন হল হাকু কাটকম


এই দিনটি মাছ খাওয়ার দিন৷প্রত্যেক বাড়িতে মাছ রান্না করে খাওয়া হয়৷সন্ধ্যাবেলায় হয় সমবেত নাচ ও গান৷

সহরায়ের ষষ্ঠ ও শেষ দিনটি হল ‘সাকরাত’


ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনে গ্রামের পুরুষরা তিরধনুক ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে শিকারের উদ্দেশ্যে বের হয়৷শিকার সাঙ্গ হলে গ্রামের একস্থানে কলাগাছ পুঁতে সেখানে তেলের পিঠে রেখে চলে কলাগাছকে নিশানা করে তিরবিদ্ধ করার কাজ৷দিনের শেষে শিকার করা মাংস রান্না করে খাওয়াদাওয়ার মধ্য দিয়ে সহরায় পরবের পরিসমাপ্তি ঘটে৷

আদিবাসী রিক্রিয়েশন ক্লাবের প্রভাত কিসুক বলেন যে, যদিও শহরে থেকে ছয়দিনের উৎসব পালন করা সম্ভব নয়৷ শেষদিনের সাকরাত অনুষ্ঠানটিও শহরে করা সম্ভব হয় না৷কিন্তু সমস্ত পরিবারগুলি একত্রে মিলিত হয়ে নাচ গান ও খাওয়াদাওয়া করে আনন্দে মেতে ওঠে৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page