জেলাশাসকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি মোস্তাক আলমের
top of page

জেলাশাসকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি মোস্তাক আলমের

গোটা দেশের সঙ্গে মালদা জেলায় আগামী ২৩ এপ্রিল ভোট হতে চলেছে৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় ভোটের দায়িত্বে ছিলেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার৷ সেই নির্বাচনে কী হয়েছে, তা সংবাদমাধ্যমের দৌলতে গোটা দেশের মানুষ জানে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন একথা বলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম৷ দলের সদর দপ্তর হায়াত ভবনে আয়োজিত এই সভায় তিনি আরও বলেন, লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা ইতিপূর্বে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছি৷ আমরা সেখানে বলেছি, এই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না৷



রাজ্য নির্বাচন অফিসারের কাছে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা

মোস্তাক সাহেব আরও বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমাদের কাছে খবর আসছে, মালদা জেলার সমস্ত সয়ংভর গোষ্ঠীর সদস্যদের জেলাশাসক নিজের জেলা ও ব্লক পর্যায়ের ম্যানেজারদের দিয়ে নির্দেশ পাঠাচ্ছেন, শাসকদলের হয়ে কাজ না করলে তাঁদের গ্রুপ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে৷ জেলাশাসক এটা করতে পারেন না৷ এই জেলাশাসক একসময় মালদা জেলা স্কুলের ছাত্র ছিলেন৷ তাঁর বাবা রেলে কাজ করতেন৷ সেই সুবাদে তাঁরা মালদা শহরের ঝলঝলিয়া এলাকায় থাকতেন৷ সেই সূত্রে জেলাশাসক মালদার সবকিছুই জানেন৷ বর্তমানে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ৷ এই জেলাশাসকের নেতৃত্বে মালদা জেলা প্রশাসনকে কীভাবে কলুষিত করা হচ্ছে তার প্রমাণ মিলেছে মহাত্মা গান্ধি ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিমের কাজে৷ ওই প্রকল্পে বনসৃজনের কাজে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে৷ বন দপ্তর থেকে এক টাকার গাছ ২৭ টাকায় কেনা হয়েছে৷ সেই গাছ রক্ষা করার জন্য নিজের পছন্দের লোককে দিয়ে খাঁচাও বানিয়েছিলেন৷ এরপর কোনও টেন্ডার ছাড়াই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে খাঁচা ও গাছ পাঠিয়ে দিলেন৷ আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, ওই গাছের ২০ শতাংশও যদি কেউ জীবিত দেখাতে পারেন, তবে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব৷ কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা তছরুপ করার জন্য এই জেলাশাসকের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন৷ তাই জেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমরা আজ জাতীয় নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি৷


মালদার পুলিশ সুপারকে সিবিআই বেশ কয়েকবার নোটিশ দেয়৷ তিনি সারদা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত৷ তাঁর নেতৃত্বে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলার প্রতিটি জায়গায় ভোট লুট হয়েছে৷ ভয়ে তিনি বিজেপির জায়গাগুলোতে লড়তে পারেননি৷ কারণ, বিজেপিকে খুশ রাখতে হবে তাঁকে৷ তা না হলে কেন্দ্র তো আবার তাঁকে ধরবে৷ কয়েকদিন ধরে শুধুমাত্র কংগ্রেসের লোকজনের কাছে পুলিশের নোটিশ আসছে৷ তাদের বিরুদ্ধে নাকি ১০৭ ধারায় মামলা রয়েছে৷ কিন্তু যারা পঞ্চায়েত ভোট লুট করল, আদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ১০৭ ধারায় মামলা রুজু করা হয়নি৷ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের নামের তালিকা পুলিশ সুপারকে পাঠিয়েছে, আর পুলিশ সুপার সেই তালিকা ধরে বিভিন্ন থানার পুলিশের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠিয়েছে৷ আমরা মালদা জেলা আদালত ও চাঁচল মহকুমা আদালতে খোঁজ নিয়ে দেখেছি, যে কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে, তার কোনও অভিযোগকারীই নেই৷


অভিযোগ করেন মোস্তাক আলম, চাঁচলে রাহুল গান্ধির সভার পর মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত শাসকদলের মন্ত্রী, পঞ্চায়েত ভোটে যেসব সমাজবিরোধী ভোট লুটতরাজ করেছিল, তাদের তৃণমূল ভবনে ডেকে বলে দিয়েছেন, তারা যেন এই জেলায় ত্রাস তৈরি করে৷ পুলিশ সুপার তাদের পিছনে রয়েছে৷ তারা ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে৷ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলছে, ভোটের পর কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না৷ তখন মানুষ কোথায় যাবে৷ তাছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে থাকবে, গ্রামে কে বাঁচাবে৷ তাই জেলায় অবাধ ও সুষ্ঠু ভোটের জন্য আমরা জাতীয় নির্বাচন কমিশনার, রাজ্য নির্বাচন অফিসারের কাছে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা৷

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page