ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে অশ্লীল ছবি প্রচার, গ্রেপ্তার যুবক
ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে এক ছাত্রীর অশ্লীল ছবি প্রচার করার অভিযোগের খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই নড়চড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। শুরু হয় জোরকদমে তদন্ত। সাফল্যও মেলে। অভিযুক্ত যুবককে গতকাল মাঝরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ পুলিশি জেরায় ধৃত যুবক নিজের সমস্ত দোষও স্বীকার করেছে৷ ১০ দিনের পুলিশি হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে এদিন ধৃতকে চাঁচল মহকুমা আদালতে তুলেছে পুখুরিয়া থানার পুলিশ৷
ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পুখুরিয়া এলাকার দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর অশ্লীল ছবি ছড়িয়ে পরার খবর গতকাল প্রকাশিত হয়৷ সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে৷ ভবানী ভবন থেকেও এই ঘটনা নিয়ে জেলা পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হয়৷ এরপরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে জেলা পুলিশ প্রশাসন৷ বিকেলে ওই কিশোরী ও তার বাবাকে পুলিশ সুপারের দপ্তরে ডেকে পাঠানো হয়৷ এরপরেই ওই ছাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন পুলিশ ও সিআইডি’র কর্তারা৷ চিহ্নিত করা হয় অভিযুক্ত যুবককে৷
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরা পর্বে পুলিশ ও সিআইডি কর্তারা ওই ছাত্রীর কাছে তার সমস্ত আত্মীয় পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের বিষয়ে প্রশ্ন করতে শুরু করেন৷ তখনই ওই কিশোরী জানায়, তার পিসির বাড়ি ইংরেজবাজার থানার গোপালপুর গ্রামে৷ তার দুই পিসতুতো দিদির মধ্যে একজনের সঙ্গে চাঁচলের মালাহার গ্রামের যুবক যতীন্দ্রনাথ সাহার প্রেম রয়েছে৷ মাস ছয়েক আগে সেই ঘটনা সে সবাইকে জানিয়ে দেয়৷ এতে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল৷ ছাত্রীর এই বক্তব্যই পুলিশের সামনে কিছুটা পথ খুলে দেয়৷ শুরু হয়ে যায় যতীন্দ্রনাথের খোঁজখবর৷ এরপরেই উঠে আসে প্রকৃত তথ্য৷ নিজের মোবাইল ফোন থেকেই ওই ছাত্রীর নামে ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলে যতীন্দ্রনাথ৷ সেই অ্যাকাউন্ট থেকেই সে একাধিক অশ্লীল ছবি পোস্ট করে৷
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মালাহার গ্রামের বছর ২৪ এর যুবক যতীন্দ্রনাথ পলিটেকনিক পাশ করেছে৷ প্রথম এক বছর সে মালদা পলিটেকনিকে পড়লেও পরের তিন বছর সে হরিয়ানার একটি পলিটেকনিকে পড়াশোনা করে৷ এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবেই সবাই চেনে তাকে৷ তাকে ধরার জন্য তদন্তের আইও, চাঁচল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সজলকান্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশ গতকাল সন্ধেতেই মালাহার গ্রামে হানা দেয়৷ কিন্তু সেই সময় যতীন্দ্রনাথ একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হরিশচন্দ্রপুরে গিয়েছিল৷ বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে মাঝরাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়৷ পুলিশি জেরায় যতীন্দ্রনাথ নিজের কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে নেয়৷ সে জানায়, সে এই কিশোরীকে আগে থেকে চিনলেও তার সঙ্গে কখনও অশালীন আচরণ করেনি৷ কিন্তু এই কিশোরীর জন্য তাদের প্রায় তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার মুখে, তাই প্রতিহিংসাবশত সে এই কাজ করেছে৷
এই ঘটনায় ধৃত যতীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে প্রবর্তিত আইটি অ্যাক্টের ৬৬এ, বি, সি ও ই ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ প্রতিটি ধারাই জামিন অযোগ্য৷ ১০ দিনের পুলিশি হেপাজতের আবেদন জানিয়ে এদিন তাকে চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments