পদত্যাগ করলেন মালদা কলেজের অধ্যক্ষ উত্তমকুমার সরকার
আচমকা মালদা কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগ করলেন উত্তমকুমার সরকার৷ নিজের পদত্যাগপত্র তিনি ইতিমধ্যেই কলেজের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর তথা জেলাশাসককে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ জেলাশাসক আপাতত তাঁকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ উত্তমবাবু অধ্যক্ষ পদে থাকার ক্ষেত্রে পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করলেও এর পিছনে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ, প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কথাই উঠে আসছে৷ উল্লেখ্য গত দুই বছরে মালদা কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পেয়েও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন পাঁচ জন অধ্যাপক।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বারান্দা, সাইকেল স্ট্যান্ড, এক বেঞ্চে ৫ জনের পরীক্ষাগ্রহণকে ঘিরে গোটা রাজ্যের সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে মালদা কলেজ৷ জেলা সফরে এসে এনিয়ে ক্রুদ্ধ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের সামনে পড়তে হয় গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষকে৷ কিন্তু প্রথম থেকেই কলেজের অধ্যক্ষ উত্তমকুমার সরকার এই ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বলে উল্লেখ করেন৷ নিজের বক্তব্যের সপক্ষে একাধিক তথ্যও পেশ করেন তিনি৷ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও একাধিক পদাধিকারিকের পরিবর্তন হয়েছে৷ দায়িত্ব নিয়েছেন নতুন জেলাশাসক৷ কিন্তু পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া চাপানউতোর বন্ধ হয়নি৷
দায়িত্ব দেওয়ার পর নতুন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর৷ জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তিনি একাধিকবার কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ একাধিকবার নিজের দপ্তরে ডেকে পাঠান উত্তমবাবুকে৷ মালদা কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের দপ্তরে ডেকে পাঠিয়েও জেলাশাসক একাধিকবার উত্তমবাবুর সঙ্গে অসহযোগিতা করেন৷ নিজের কক্ষের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে রাখলেও উত্তমবাবুর সঙ্গে দেখা করেননি তিনি৷ এতে অপমানিত হন কলেজের অধ্যক্ষ৷ শুধু তাই নয়, শাসকদলের জেলা নেতৃত্বের একাংশও নাকি পরীক্ষা ইশ্যুতে উত্তমবাবুর পদত্যাগের পক্ষে সওয়াল করে যাচ্ছিল৷ তা নিয়েও প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়৷ যদিও এনিয়ে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না৷ মুখ খুলতে নারাজ উত্তমবাবুও৷ এদিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি শুধু জানিয়েছেন, পারিবারিক সমস্যার জন্য গত ১৬ অক্টোবর তিনি নিজের পদত্যাগপত্র জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন৷ জেলাশাসককে তিনি নিজের সমস্যার কথা বুঝিয়ে বলেছেন৷ এরপরেই গতকাল তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে৷ তাঁকে আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে৷
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল জেলাশাসক উত্তমবাবুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন৷ মালদা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে অধ্যাপক প্রভাস চৌধুরিকে দায়িত্ব দিয়েছেন জেলাশাসক৷ আগামী ৩১ অক্টোবর নিজের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন প্রভাসবাবু৷ ততদিন পর্যন্ত উত্তমবাবুই অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাবেন৷ এদিন অবশ্য জেলাশাসকের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Коментари