পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ
- আমাদের মালদা ডিজিট্যাল
- Jun 10
- 2 min read
স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। ওই গৃহবধূকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর ছেলে সহ ভাইও। কোনোমতে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করেন পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া থানার বালুপুর গ্রামে। এই ঘটনায় গতকালই গৃহবধূর স্বামী সহ পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত গৃহবধূর ভাই। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিশ।
আক্রান্ত গৃহবধূর নাম পিংকি মণ্ডল (৩৫)। বাড়ি মানিকচক থানার খয়েরতলা গ্রামে৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৬ বছর আগে বালুপুর গ্রামের সাহাপাড়ার বাসিন্দা পশুপতির সঙ্গে বিয়ে হয় পিংকির৷ তাঁদের তিন ছেলে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় দু’বছর ধরে পশুপতি স্থানীয় একটি বধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন৷ ওই বধূর সঙ্গেই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটান৷ স্বামীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করেন পিংকি৷ সেই থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। এরপর থেকেই নানা আছিলায় পশুপতি ও তার বাড়ির লোকজন পিংকির উপর অত্যাচার চালাতে থাকে৷ অভিযোগ, দিন পনেরো আগে পিংকির উপর প্রচণ্ড অত্যাচার করা হয়৷ সেদিন ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে খুন করার চেষ্টা করে পশুপতি৷ কোনোমতে প্রাণে বেঁচে আহত অবস্থায় বাবার বাড়ি চলে যান পিংকি৷ সেখানে থেকে চিকিৎসার পর রবিবার শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন৷ সোমবার রাতে তাঁর উপর ফের হামলা চালানো হয়।

পিংকির ছেলে আশিস জানায়, বাবা, জ্যেঠু আর জ্যেঠিরা মাকে ইট আর লাঠি দিয়ে মারছিল৷ মারে মা অজ্ঞান হয়ে গেলে ওরা গলায় ফাঁস লাগিয়ে মাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে৷ ছাড়াতে গেলে ওরা আমাদেরও মারধর করে৷ পরিস্থিতি দেখে আমি মামাকে ফোন করে জানাই৷ কিছুক্ষণের মধ্যে মামা আমাদের বাড়িতে চলে আসে৷ মাকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই ওরা বাইকের চাবি ছিনিয়ে মামাকে মারধর করে৷ মামা কোনোমতে স্ট্যান্ডে গিয়ে টোটোর ব্যবস্থা করে। কিন্তু ওরা টোটোকেও বাধা দেয়। অবশেষে গ্রামের মানুষজন ছুটে এলে ওরা টোটো ছেড়ে দেয়৷
পিংকির ভাই রিংকু জানান, জামাইবাবু পরকীয়ায় জড়িত৷ প্রতিবাদ করায় জামাইবাবু দিদির উপর অকথ্য অত্যাচার চালাচ্ছে৷ এই ঝামেলার জেরে পনেরো দিন আগেও দিদিকে ছুরি মেরে খুন করার চেষ্টা করেছিল৷ একটু সুস্থ হয়ে রবিবার দিদি শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যায়৷ সোমবার সন্ধেয় জামাইবাবু, ওর দাদা, মা, বউদি আর ভাই দিদির উপর ফের অত্যাচার চালাতে থাকে৷ ভাগ্নে ফোন করে জানায়, ওরা দিদিকে মেরে ফেলেছে৷ খবর পেয়েই আমি ছুটে যাই। দিদিকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওরা আমাকেও মারধর শুরু করে৷ শেষ পর্যন্ত গ্রামের মানুষজনের হস্তক্ষেপে দিদিকে রতুয়া হাসপাতালে ভরতি করি৷ রাতেই সমস্ত ঘটনা জানিয়ে জামাইবাবু সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি৷
রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক৷ অভিযুক্তদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি জারি রয়েছে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comentarios