ধর্ষিতা এক ছাত্রীর ঝুলন্তদেহ উদ্ধার
কালিয়াচক ২ ব্লকের রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে নবম শ্রেণির ধর্ষিতা এক ছাত্রীর ঝুলন্তদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মঙ্গলবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল ৷খবর পেয়ে স্থানীয় মোথাবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷এই ঘটনায় এলাকার এক কুখ্যাত যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে মৃত ছাত্রীর পরিবার৷ওই যুবকের বিরুদ্ধেই মৃত ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল৷তবে পুলিশ অভিযুক্ত যুবকের সন্ধান পায়নি৷
স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত সেই ছাত্রী৷ মৃত ছাত্রীর বয়স ১৭ বছর৷ গত ২৩ জুন মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করে ওই ছাত্রী জানায়, তার আগের দিন রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রেজাউল শেখ নামে এক যুবক বাড়ির সামনে এসে তাকে ডাকে৷ জানালা দিয়ে সে তার সঙ্গে কথা বললে রেজাউল তাকে বাড়ির বাইরে আসতে বলে৷ সে তার কথামতো বাড়ির বাইরে এলে রেজাউল ছুরি দেখিয়ে তাকে জোর করে সেখান থেকে একটু দূরে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণ করে৷ ঘটনার কথা কাউকে বললে রেজাউল তাকে খুন করার হুমকি দেয়৷ সে আগে বুঝতেই পারেনি রেজাউল তাকে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের বাড়িতে এসেছিল৷ অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসার পর রাতে সে সব কথা অভিভাবকদের খুলে বলে৷ পরদিন সে নিজেই রেজাউলের বিরুদ্ধে মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পরেই রেজাউল ধর্ষিতা ছাত্রী ও তার পরিবারকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল৷ অভিযোগ না তোলা হলে সে ওই ছাত্রীকে খুনের হুমকিও দেয়৷ এদিন সকালে বাড়ির একটি ঘরে অ্যাসবেস্টাসের চাল থেকে ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের মানুষজন৷ খবর পেয়ে পুলিশকর্মীরা এসে দেহটি উদ্ধার করেন৷
ওই ছাত্রীর এক আত্মীয় গোটা ঘটনার পেছনে রেজাউলের হাত দেখতে পাচ্ছেন৷ তাঁর দাবি, আত্মহত্যা নয়, তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে রেজাউল৷ অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে রেজাউল ও তার দলবল অভিযোগ তুলে নেওয়ার চাপ দিয়ে প্রতিদিনই ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে মারধর করত৷ ভয়ে কয়েকদিন থেকেই ওই ছাত্রীর ৪ ভাইবোন তাঁর বাড়িতে রয়েছে৷ বাবা-মায়ের সঙ্গে বাড়িতে থাকত শুধু ছাত্রীটি৷ এদিন সকালে রেজাউল ফের দলবল নিয়ে সেখানে চড়াও হয়৷ তাদের হাতে পিস্তল ছুরি ছিল৷ তারা ঘরের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢোকে৷ এরপর শ্বাসরোধ করে খুন করার পর মেয়েটিকে ঘরের চাল থেকে ঝুলিয়ে দেয়৷ তবে এই ঘটনার জন্য পুলিশকেও দায়ী করেছে মৃতের পরিবারের লোকজন৷ তাঁদের বক্তব্য, ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও পুলিশ রেজাউলকে গ্রেফতার করতে কোনো সদর্থক ভূমিকা নেয়নি৷ সে কারণেই এমন বেঘোরে প্রাণ দিতে হল জলজ্যান্ত একটি মেয়েকে৷
যদিও এনিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি মোথাবাড়ি থানার পুলিশ৷ তারা শুধু জানিয়েছে, এদিন এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এই ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে৷ অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবকের খোঁজ চলছে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
留言