এনআইএ তদন্তের দাবিতে অনড় বিজেপি, নমুনা সংগ্রহ করল ফরেনসিক
গত বৃহস্পতিবার সুজাপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণ হয়৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই নাবালক সহ চার শ্রমিকের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই কীভাবে এই বিস্ফোরণ হল সেই প্রশ্নে বিদ্ধ হতে থাকে সুজাপুর। গতকাল রাতে সুজাপুরে পৌঁছে প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণের জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করল ফরেনসিক দল৷ তাঁরা পার্শ্ববর্তী একটি প্লাস্টিক কারখানার মেশিনপত্র পরীক্ষা করেও দেখেন। তবে বিস্ফোরণের কারণ প্রসঙ্গে তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন বলেই জানিয়েছেন। এদিকে, এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবিতে অনড় বিজেপি নেতৃত্ব।
গতকাল সুজাপুরের বিস্ফোরণস্থলে স্পেশাল টাস্কফোর্স তদন্ত করে যাওয়ার পর, রাতে সুজাপুরে পৌঁছে প্লাস্টিক কারখানায় বিস্ফোরণের জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক দল৷ এর পাশাপাশি প্লাস্টিক স্ক্র্যাপের কাজকর্ম হওয়া পার্শ্ববর্তী অপর একটি কারখানার মেশিনপত্র তাঁরা খুঁটিয়ে দেখেন। স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা হয় তাঁদের। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁদের এই কাজ চলে। বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখতে আসা এই ফরেনসিক দলের নেতৃত্বে ছিলেন চিত্রাক্ষ সরকার। পরিদর্শন করার পর চিত্রাক্ষবাবু জানিয়েছেন, “বিস্ফোরণ স্থান থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে৷ তবে কী কারণে বিস্ফোরণ, তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷ এনিয়ে আমাদের আরও কাজ করতে হবে৷” আজ আরও একবার এই ফরেনসিক দল বিস্ফোরণস্থলে যাবে, জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
এই দুর্ঘটনার পর স্তব্ধ হয়ে গেছে কালিয়াচক জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ২৫০টিরও বেশি প্লাস্টিক স্ক্র্যাপ ইউনিট। প্রতিবছর প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার প্লাস্টিক স্ক্রাপিংয়ের ব্যবসা হয়ে থাকে সুজাপুরে। বাড়ি বাড়ি থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন ব্যক্তি সুজাপুরে এই ধরণের কারখানায় সেই প্লাস্টিকগুলি বিক্রি করে দেন। স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা গেল রীতিমত চমকে দেওয়া তথ্য, শুধু মালদা নয় রাজ্যের অন্যান্য জেলা এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই ধরণের প্লাস্টিক এসে জমা হয় কালিয়াচক এলাকায়। সেখানে ঝাড়াই বাছাই করার পর স্ক্র্যাপ তৈরির মেশিনে সেগুলি দেওয়া হয়। এই মেশিনে চার থেকে ছয়টি ব্লেড থাকে। মেশিনে প্লাস্টিক টুকরো করার পর মেল্টিং মেশিনে গলিয়ে পুনরায় প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিস তৈরি এই কারখানাগুলিতে। যে কারখানায় বিস্ফোরণ হয় সেখানে ৪৫ হর্স পাওয়ারের মেশিন চলছিল। যেসময় এই দুর্ঘটনা ঘটে তখন প্রায় ১৫ জন শ্রমিক সেখানে কাজ করছিল।
[ আগের খবরঃ সুজাপুরে পৌঁছল এসটিএফ, খালি হাতে ফিরল বিজেপি নেত্রী! ]
ঘটনার পর থেকেই জেলা বিজেপি’র তরফে বোমার প্রসঙ্গ উঠে আসে। রাজ্যপালও নিজের বক্তব্যে বিস্ফোরকের কথা বলেন। দুর্ঘটনার দিন তড়িঘড়ি চপারে মালদায় পৌঁছন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি নিহত শ্রমিকদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পর এই বিস্ফোরণের সাথে বোমা তৈরি হওয়ার দাবী একদম নস্যাৎ করে দেন।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments