মহালয়ার পিকনিক, মদ কেনার টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হাঁসুয়ার কোপ
মহালয়ার আগের রাতের পিকনিক৷ মদ-মাংসের ঢালাও আয়োজন ছিল৷ বছরের দিনে মদ্যপানের নেশা উঠেছিল স্বামীরও৷ কিন্তু মদ কেনার টাকা দেবে কে? স্ত্রীকে সেই টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্বামী৷ টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করে সে৷ ওই বধূকে নিগ্রহে হাত লাগায় শাশুড়ি ও ভাসুরও৷ অভাবনীয় ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারবাসিনী গ্রামে৷ গুরুতর আহত ওই বধূকে স্থানীয় মানুষজন মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেছেন৷ এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে৷ তবে গা ঢাকা দিয়েছে অভিযুক্তরা৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় শ্রমিক পিন্টু৷ পিন্টুর বাড়িতে রয়েছে দাদা সুনীল রজক ও মা বেহুলা রজক৷ বছর সাতেক আগে পুরাতন মালদার রুমা রজকের সঙ্গে দুয়ারবাসিনী গ্রামের পিন্টু রজকের বিয়ে হয়৷ পিন্টু ও রুমার এক ছেলে, এক মেয়ে রয়েছে৷ অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নানা আছিলায় স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করে পিন্টু৷ তাতে সায় ছিল বেহুলা রজকেরও৷ এনিয়ে বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত৷ গ্রামবাসীরাও বিষয়টি জানত৷ এনিয়ে গ্রামের বাসিন্দারা রজক পরিবারের বিবাদ মেটানোর উদ্যোগও নেন৷
রুমাদেবীর এক আত্মীয় পঞ্চানন রজক বলেন, স্ত্রীর কাছে টাকা দাবি করা পিন্টুর অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ টাকা না দিলে সে স্ত্রীকে মারধর করতে ছাড়ত না৷ মারধরে হাত লাগাত বেহুলা ও সুনীলও৷ কিছুদিন আগে পিন্টু স্ত্রীর কাছে ৮ হাজার টাকা দাবি করে৷ সেই টাকা না দেওয়ায় তারা রুমার উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়৷ কিন্তু রুমার বাবার বাড়ির অবস্থাও ভালো নয়৷ অত টাকা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না৷ এনিয়ে গ্রামবাসীরা সালিশির মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ মেটানোর উদ্যোগ নেন৷ কিন্তু পিন্টু বা তার পরিবারের কেউ সালিশি সভায় উপস্থিত থাকতে রাজি হয়নি৷ গতকাল রাতে মদ কেনার জন্য পিন্টু রুমার কাছে টাকা চায়৷ সেই টাকা দিতে না পারায় সে রুমাকে প্রথমে লাঠি দিয়ে মারে, পরে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কোপায়৷ মারধরে হাত লাগায় বেহুলা ও সুনীলও৷ গ্রামের লোকজন রুমার চিৎকারে ছুটে গিয়ে তাকে প্রাণে বাঁচান৷ তাঁরাই রুমাকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন৷ খবর দেওয়া হয় রুমার বাবার বাড়িতে৷ এই ঘটনায় রুমার পরিবারের পক্ষ থেকে এদিন ইংরেজবাজার থানায় পিন্টু, তার মা ও দাদার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে৷ তবে পিন্টুরা এলাকায় নেই৷ রাতেই তারা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments