বনধ্ আটকাতে এলে পাবলিক পিটিয়ে ছাল খুলবেঃ দিলীপ
top of page

বনধ্ আটকাতে এলে পাবলিক পিটিয়ে ছাল খুলবেঃ দিলীপ

আগামী বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর রাজ্যে ডাকা বনধে্র সমর্থনে আয়োজিত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এককথায় হুমকি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ ‘কাকে ওনারা আটকাবেন৷ কে রাস্তায় নামবে৷ পাবলিক পিটিয়ে ছাল খুলে নেবে৷ একবার নেমে দেখুন৷ পুলিশ ঠেকাতে পারবে না৷ জেড ক্যাটিগরি নিয়ে ওনার সব মন্ত্রীরা ঘুরছেন৷ যেদিন জেড ক্যাটিগরি উঠে যাবে, একটি মারও বাইরে পড়বে না৷ ব্যান্ডেজ বাঁধায় জায়গাটাও পাবেন না৷’ এদিন সন্ধেয় মালদা শহরের এলআইসি মোড়ে এক পথসভায় অংশ নেন দিলীপবাবু৷



এই সভায় তিনি আরও বলেন, এই রাজ্যে এখন শিল্প নেই, চাকরি নেই, ব্যবসা করতে গেলে তোলাবাজি ও সিন্ডিকেট রাজের মুখে পড়তে হচ্ছে৷ বাকি ছিল শিক্ষা ব্যবস্থা৷ এই রাজ্যকে গোটা পৃথিবীর লোক শিক্ষিত বলে জানে৷ স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, রামমোহন রায়, রামকৃষ্ণ-চৈতন্যের এই বাংলা৷ তাঁরাও এই বাংলার জন্য গর্বিত৷ কিন্তু গত দু’একবছর ধরে সেই বাংলা আর নেই৷ বাম আমলেও এখানে শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে৷ আজ সার্বিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ আজ একটি স্কুলের পড়ুয়ারা শিক্ষক চেয়েছে৷ তাদের সেই অধিকার রয়েছে৷ অথচ সেই দাবির জন্য তাদের দিকে গুলি চালিয়ে দেওয়া হল৷ ইসলামপুরের ওই এলাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলা তুলে দেওয়া হচ্ছে৷ দাড়িভিট হাইস্কুলে ছুটির দিন উর্দু ভাষার শিক্ষককে নিয়োগ করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ৷ তা জানতে পেরে পড়ুয়ারা স্কুলে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল৷ পুলিশ তাদের লাটিপেটা করে৷ এই কারণে পুলিশ তাদের গুলি চালিয়ে দিল? এই পুলিশ রক্ষক না ভক্ষক? কাশ্মীরে তো পড়ুয়ারা পুলিশ কিংবা মিলিটারিকে লক্ষ্য করে ইট মারে৷ সেখানে পড়ুয়াদের ব্যাগে উগ্রপন্থীরা ইট-পাথর ভরে দেয়৷ সেখানে তো পুলিশ কিংবা মিলিটারি পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় না! কারণ, সেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা জানে, এতে পড়ুয়ারা দোষী নয়৷ তাদের পরে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে৷ আর এখানে বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা পড়তে চেয়েছে বলে তাদের উদ্দেশ্যে গুলি চালিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এই রাজ্যে পুলিশও এখন রাজনীতি করছে৷ তাদের মনে রাখা উচিত, তাদেরও ছেলেমেয়ে রয়েছে৷ তারাও স্কুলে পড়ে৷ এমন না হয় একদিন পুলিশের বাড়ির লোকজন পুলিশের পরিবারের সদস্য বলে লজ্জা পাবে৷ ওই পথসভায় এদিন তিনি কার্যত আগামী লোকসভা নির্বাচনের ডঙ্কাও বাজিয়ে দিয়েছেন৷ তিনি আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে আরও একবার পরিবর্তনের ডাক দিয়েছেন৷



উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতির, পুলিশের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় গ্রেফতারি নিয়েও এদিন সরব হন দিলীপবাবু৷ তিনি বলেন, সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে৷ ইসলামপুরের দাড়িভিট এলাকায় পুলিশ রাতেও মা-বোনদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে৷ সেই কারণে শংকরবাবু পুলিশকে গাছে বেঁধে রাখতে বলেছিলেন৷ তিনি কী অন্যায় করেছেন? রাতে চোর এলেও তো বেঁধে রাখা হয়৷ পুলিশ এখন তৃণমূলের পার্টি অফিসে বস্তা বস্তা বোমা রাখা থাকে৷ রোজ সেসব ফাটে৷ টিএমসি পার্টি অফিস উড়ে যাচ্ছে৷ নিজেদের মধ্যে মারপিট করছে৷ আজকেও পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না থানা এলাকায় পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে মারামারি হয়েছে৷ সেখানে ওসি আক্রান্ত হয়েছেন৷ ৬ মাস আগেও উলুবেড়িয়ার ওসি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হয়ে ৬ মাস কোমায় ছিলেন৷ সেসব ঘটনায় ক’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে? কটা মামলা হয়েছে? আর দাড়িভিটে পুলিশের বিরুদ্ধে বলা হলেই বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে৷ বীরভূমের কেষ্টদা প্রকাশ্যে পুলিশকে নির্দেশ দিচ্ছে, এটা কর, ওটা কর৷ একে গাঁজার কেস দিয়ে দে৷ কেন? পুলিশ কি চাকরবাকর হয়ে গিয়েছে? উত্তর দিনাজপুরের জেলা বিজেপি সভাপতি ঠিক বলেছেন৷ পুলিশ নিজেদের কাজ করছে না৷ তাদের বেঁধেই রাখা উচিত।



ব্রিজ দুর্ঘটনা নিয়েও এদিন তিনি কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে৷ তিনি বলেন, আজও কাকদ্বীপে একটি ব্রিজ ভেঙে পড়েছে৷ উল্টোডাঙা, পোস্তা, মাঝেরহাট, শিলিগুড়ি- কোথায় না ব্রিজ ভাঙছে৷ ববি হাকিম এখন ব্রিজ পরিদর্শন করে বেড়াচ্ছেন৷ তিনি আজই লিখেছেন, মন্ত্রী যেন ব্রিজের নীচে গিয়ে ব্রিজ পরিদর্শন করতে না যান৷ নাহলে কখন আবার তাঁর ব্রিজ চাপা পড়ার ছবি বেরিয়ে যায়! শুধু নীল-সাদা রং করলেই কি ব্রিজ ঠিক থাকে! এই ব্রিজ ভাঙা শেষ হতে না হতেই সরকার ভেঙে যাবে৷ ২০২১ সাল যাবে না৷ এরপরেই বনধ্ নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন দিলীপবাবু৷ সাফ জানান, বনধ্‌ আটকাতে সেদিন রাস্তায় নামলে পাবলিক পিটিয়ে ছাল খুলে নেবে৷ তাঁর বক্তব্য, তাঁরা মানুষকে অসুবিধের মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন৷ কিন্তু এছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় নেই৷



আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ভিডিয়োঃ কৃতাঙ্ক


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page