পাচারের নেক নজরে মালদা
top of page

পাচারের নেক নজরে মালদা

ঠিক যেন হিন্দি সিনেমার দৃশ্য৷কাঁটাতারের ওপার থেকে উড়ে আসছে প্যাকেট৷আর এপারে থাকা লোকগুলো ক্যাচ লুফে রাতের অন্ধকারে গা-ঢাকা দিচ্ছে সীমান্ত গ্রামে৷কখনো কখনো বিএসএফ জওয়ানদের তাড়া খেয়ে প্যাকেট ফেলেই ছুটতে হচ্ছে৷তবু পরোয়া নেই৷নজরদারির ফাঁক পেলেই প্যাকেট পাচারের কৌশলী পদক্ষেপ৷উড়তা পাঞ্জাব-এর উড়ন্ত প্যাকেটে ছিল মাদক৷কিন্তু এখানে সেসব নয়৷প্যাকেট বন্দি হয়ে সীমান্ত পার থেকে উড়ে আসছে তোড়া তোড়া টাকা৷তবে পুরোটাই জাল৷হ্যাঁ, এভাবেই কালিয়াচক সীমান্তকে সফট্ টার্গেট করেছে জাল টাকার কারবারিরা৷ এবছরেই অন্তত দুবার এই ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে বিএসএফ৷ ভারতের অর্থনীতিকে দুর্বল করতে মরিয়া বিদেশি শক্তি৷ আর একাজে সফল হতে হলে ভারতের মাটিতে জাল নোটের সাপ্লাই লাইনটা ঠিক রাখতে হবে৷বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি এদেশেও নিজেদের এজেন্ট ছড়িয়ে রেখেছে ভাইদের ‘ডি’ কোম্পানি৷ তবে সামনে মাফিয়া ডনের ছায়া থাকলেও, জাল নোটের জাল ছড়ানোর ব্লু-প্রিন্টটা আদতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর৷তবে বিএসএফ ও পুলিশের কড়া নজরদারির ফলে বাজারে ছড়ানোর আগেই জাল টাকার মারণাস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে৷


Cattle trafficking in Malda

মালদার ভৌগোলিক অবস্থান এই জেলাকে পাচারকারীদের নেক নজরে রেখেছে৷তা সে জাল নোটের কারবারই হোক বা গোরু-মোষের পাচার৷মালদার মাটিকে ব্যবহার করতে চায় এরা সকলেই৷

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান ঘাঁটলে এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে৷মালদা হয়ে বাংলাদেশে গোরু এমনকি মোষ পাচারের ঘটনা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে এবছরে৷গোরু পাচারের নিত্যনতুন কৌশল ফাঁদছে এরা৷আগে সীমান্ত এলাকায় গোরু পাচার চলত বাংলাদেশে৷এখন রীতিমতো শহরের বুকেই দাপাচ্ছে গোরু পাচারকারীরা৷কিন্তু কীভাবে?

একাজে পিক আপ ভ্যান বা ছোটো লরিকে ব্যবহার করছে গোরু পাচারকারীরা৷গাড়ির মধ্যে গোরু পুরে চারিদিকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে৷তারপর সেই গাড়ি মালদা ও পুরাতন মালদা শহরের বুক চিরে ছুটছে সীমান্তের উদ্দেশ্যে৷আমজনতার বোঝার সাধ্যিই নেই যে, ওইসব গাড়ির ভেতর পাচারের জন্য গোরু মজুত রয়েছে৷কিন্তু দুর্বৃত্তদের ওপর কড়া নজর রয়েছে পুলিশের৷তাই ফন্দি যতই আঁটুক না কেন, পুলিশের পাতা জালে ধরা দিতেই হচ্ছে তাদের৷


৬ তারিখ রাতে সাহাপুরের সেতু মোড়ে অভিযান চালিয়ে রীতিমতো গোরু পাচারকারীদের কনভয় আটক করে মালদা থানার পুলিশ৷পরপর পাঁচটি পিক আপ ভ্যান৷আর তাতে গাদাগাদি করে রাখা ৪৪টি গোরু৷শহর পেরিয়ে সেতু মোড়ে আসতেই ওঁত পেতে থাকা পুলিশ ৫ পাচারকারী সহ গোরু ভরতি গাড়িগুলি ধরে ফেলে৷ ঠিক পরের দিনই বামনগোলা থানার পুলিশের জালে ধরা দেয় ৩ দুষ্কৃতী৷১২ মাইল এলাকা থেকে এদের পাকড়াও করা হয়৷বাংলাদেশে পাচারের জন্য ট্রাকে বোঝাই করে গোরু নিয়ে যাচ্ছিল এই পাচারকারীরা৷তবে ট্রাক সহ ২৪টি গোরুই ধরে ফেলে পুলিশ৷

৬,৭-এর পর ৮ তারিখও বাংলাদেশে গোরু পাচারের মরিয়া চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা৷৫টি পিক আপ ভ্যানে চাপিয়ে ২০টি গোরু নিয়ে যাচ্ছিল পাচারকারীরা৷তবে পুরাতন মালদায় রায়পুর ঘাট দিয়ে পাচারের আগেই বমাল দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলে পুলিশ৷গোরু পাচারে ধৃতদের অধিকাংশেরই বাড়ি কালিয়াচকে৷তবে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদার বাসিন্দাও রয়েছে পাচারকারীদের দলে৷

পুলিশের বক্তব্য, চেষ্টা যতই করুক, কোনো পাচারকারীকে রেয়াত করা হবে না৷কড়া নজর রয়েছে৷ধরা ঠিক পড়বেই৷তবে পুলিশের পাশাপাশি পাচার রুখতে তৎপর হচ্ছে সচেতন আমআদমিও৷তারই প্রমাণ মিলল ইংরেজবাজারের কেষ্টপুরে৷২৯ অগস্ট রাতে কেষ্টপুরে কাঁটাতারের পাশে জড়ো হয়েছিল পাচারকারীরা৷তবে বাংলাদেশে পাচারের আগেই তাদের দেখে ফেলে গ্রামবাসীরা৷পাচার রুখতে দুষ্কৃতীদের তাড়াও করে তারা৷তবে কিছু গোরু নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় পাচারকারীরা৷যদিও ১৫টি গোরু ও মোষ ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা৷

পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশে গোরু পাচারের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা৷তাই গাড়িতে চাপিয়ে শহর পেরিয়ে গ্রাম ছাড়িয়ে সীমান্তের দিকে ছুটছে পাচারকারীদের দল৷ তবে শেষরক্ষা হচ্ছে না৷ঠাঁই হচ্ছে শ্রীঘরেই৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page