মধ্যরাতে ত্রাণ শিবিরে চোখ খুলল ‘বন্যা’
লোক ভর্তি ত্রাণ শিবিরে হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা। কিন্তু মধ্যরাতে বানভাসি এলাকায় গর্ভবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার ভাবনাটাও বৃথা। পরিস্থিতি বুঝে এগিয়ে এলেন ত্রাণ শিবিরের মহিলারা। রাতেই মেয়ের জন্ম দিলেন মর্জিনা। গঙ্গা বানে চোখ খোলায় সকলের দাবি অনুযায়ী ফুটফুটে ওই মেয়ের নাম পড়ল ‘বন্যা’। খবর পেয়ে পরদিন নৌকার ব্যবস্থা করে সদ্যোজাত সহ মর্জিনাকে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতির ব্যবস্থা করেন ভূতনি থানার ওসি। চিকিৎসকদের দাবি মা-মেয়ে বর্তমানে সুস্থ রয়েছে, প্রতিদিন তাঁদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
কেশরপুর বাঁধ কাটার দিনেই চম্পানগরে জল ঢুকে পড়েছিল। বাধ্য হয়ে সেদিনই গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে গঙ্গার বাঁধে উঠে পড়েছিলেন সেলিম শেখ। গভীর রাতে সমস্যার কথা চিন্তা করেই পরদিন মর্জিনা সামিরুদ্দিনটোলায় বাবার বাড়ি চলে যান। দ্রুত বাঁধ মেরামত না হওয়ায় তিনদিনের মধ্যে জল ঢুকে পড়ে সামিরুদ্দিনটোলাতেও। এবারে গর্ভবতী মর্জিনাকে নিয়ে উত্তর চণ্ডীপুর বিবি হাইস্কুলে আশ্রয় নেন তাঁর মা জোনাকি বিবি। পরদিনই মর্জিনাকে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, সন্তানের জন্ম দিতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। চিকিৎসকের কথা শুনে ফের হাইস্কুলে ফিরে আসেন মর্জিনা। গত রবিবার সন্ধেয় হঠাৎ তীব্র প্রসব বেদনা শুরু হয় মর্জিনার৷ সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে, যন্ত্রণা বাড়তে থাকে৷ কিন্তু বানভাসি রাতে গর্ভবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার ভাবনায় যেন বৃথা। অবশেষে এগিয়ে আসেন ওই শিবিরে থাকা মহিলারা৷ সবার চেষ্টায় ত্রাণ শিবিরেই মেয়ের জন্ম দেন মর্জিনা৷
সোমবার এই খবর পৌঁছয় ভূতনি থানায়। থানার ওসি পবিত্র মাহাতো নৌকায় চাপিয়ে সদ্যোজাত সহ মর্জিনাকে নিয়ে আসেন মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে৷ বর্তমানে সেখানেই রয়েছেন তাঁরা। মানিকচক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অভীকশংকর কুমার জানিয়েছেন, “এই মুহূর্তে মা ও মেয়ের ত্রাণ শিবিরে ফিরে যাওয়া ঠিক হবে না৷ সেখানে সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে৷ তাই দু’জনকে হাসপাতালেই রাখা হয়েছে৷”
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments