গলায় ফাঁস লাগাল ক্রাইম থ্রিলারের পোকা রজনীকান্ত
ছোটোবেলা থেকেই ক্রাইম থ্রিলারের পোকা ছিল রজনীকান্ত। টিভিতে ক্রাইম ডায়েরি দেখে অনুকরণ করতে গিয়েছিল গাজোলের ধুয়াদিঘির নয় বছরের ছাত্রটি। আজ বাড়ি থেকে উদ্ধার হল শিশুর ঝুলন্ত মৃতদেহ। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃতের নাম রজনীকান্ত সাহা, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। মালদার গাজোল থানার পান্ডুয়া গ্রামপঞ্চায়েতের ধুয়াদিঘি এলাকায় ছোটো পরিবারে বাবা-মার সাথে থাকত সে। বাবা সমীর সাহা পেশায় দিনমজুর। মা সরস্বতী সাহা একজন গৃহবধূ। এদিন বাড়িতে বাবা-মা কেউ ছিলেন না। একা বাড়িতে সে ঘরে বিছানার উপর চারটি বালিশ পর পর সাজায় এবং গলায় দড়ি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। বাড়ি ফিরে এসে মা দেখেন ঘরে ফ্যানের সাথে ঝুলছে শিশুর দেহ। এরপর গ্রামবাসীদের সাহায্যে দেহটি উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সরস্বতী সাহা, রজনীকান্ত সাহার মা
রজনীর দিদিমাকে বাস ধরাতে বাসস্ট্যান্ডে গিয়েছিলাম। সেই সময়ই এই ঘটনা করে বসে ছেলে। ঘরে ফিরে এসে দেখি বাড়ির দরজা বন্ধ করে ফাঁস লাগিয়েছে। বাচ্চার বাবা দিনমজুরের কাজ করেন, সকালে শহরে গিয়েছিলেন কাজ করতে। টিভি ও মোবাইলে বেশিরভাগ সময় রজনীকান্ত সত্য ঘটনার অনুকরণে তৈরি এই ধরণের সিরিয়ালগুলো দেখত। অন্যের বাড়িতে টিভি দেখে বাড়ি ফিরে এসে সেই গল্প আমাদের বলত। দেখতে বারণ করলে বলত, ‘এগুলো দেখলে অনেক কিছু বোঝা যায়, তোমরা পড়াশোনা জান না তোমরা কি বুঝবে?’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় বিধায়ক দীপালী বিশ্বাস। খেলার ছলে শিশুটি এই ঘটনাটি করে ফেলেছে জানালেন তিনি। এই মৃত্যুতে তিনি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। ঘটনায় হতবাক রজনীকান্তের আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরাও। তাঁরা জানালেন, টিভিতে অতিরিক্ত ক্রাইম সিরিয়াল দেখে এ ধরণের বুদ্ধি তার মাথায় এসেছিল। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে মালদার গাজোলের ধুয়াদিঘি এলাকায়। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত আরম্ভ করেছে পুলিশ।
Comments