গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও মালদা কলেজের ইগোর লড়াইয়ের নিষ্পত্তি শীঘ্রই
পরীক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষ ঝামেলায় জড়িয়েছিল গত এপ্রিলে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তায় বিষয়টিকে ইগোর লড়াই হিসেবে নিয়ে ফেলেছে দুই পক্ষই। এবার সম্ভবত সেই লড়াইয়ের নিষ্পত্তি হতে চলেছে।
গত ২৮ এপ্রিল মালদা কলেজের বারান্দা, সাইকেল স্ট্যান্ড প্রভৃতি জায়গায় পরীক্ষা গ্রহণকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। সেই ঘটনার ঠিক পরেই মালদা সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করেন তিনি। সেখানে উপস্থিত গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী রেজিস্ট্রার অরিজিৎ দাসকে এনিয়ে কড়া ভাষায় প্রশ্ন করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তদন্তের রিপোর্টও দেখতে চান তিনি। তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর এই ঘটনার তদন্তের জন্য গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। কিন্তু এখানেও গড়িমসির অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অবশেষে দীর্ঘদিন পর সেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিন সেই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই মুহূর্তে বৈঠকে বসেছে।
উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র এদিন বলেন, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী জুন মাসে পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সেই কমিটির চেয়ারম্যান সেই কাজ করতে পরে অসম্মত হওয়ায় তদন্তের কাজ কিছুটা বাধা পায়। শেষ পর্যন্ত তিনি বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা এসএসসির দক্ষিণাঞ্চলের চেয়ারম্যান সন্তুদাস চক্রবর্তীকে চেয়ারম্যান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন সুখেন্দুশেখর দাস, ডা. শান্তিনাথ সিনহা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিকাশ রায় ও গ্রন্থাগারিক বিশ্বজিৎ দাস। যদিও অসুস্থতার কারণে শান্তিনাথবাবু তদন্ত করতে আসতে পারেননি। বাকি ৪ সদস্য গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্তের কাজ শুরু করেছেন। এদিন তাঁদের তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে। এদিনই তাঁরা তদন্ত রিপোর্ট তাঁর কাছে জমা দেবেন। তিনি সেই রিপোর্ট দ্রুত উচ্চশিক্ষা দপ্তরে পাঠিয়ে দেবেন। তিনি চান, শিক্ষাঙ্গনে এই অস্বস্তিকর পরিবেশ দূর হোক।
এদিকে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা মালদা কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম সরকার বলেন, ঘটনাটি নিয়ে এর আগেও জেলা প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাধিকবার তদন্ত করেছে। সেসবের মতো এবারও তাঁরা তদন্ত কমিটিকে সবরকম সাহায্য করেছেন। স্বল্প পরিকাঠামোতে অনেক বেশি ছাত্র ভর্তির জন্যই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। যাই হোক, উপরমহল থেকে তাঁকে যে নির্দেশ দেওয়া হবে, সেভাবেই চলবেন তিনি। এদিন তিনি নিজের কিছু কথা বলার জন্যই উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। উপাচার্যও জানান, মালদা কলেজের অধ্যক্ষ তাঁকে কিছু বলার জন্য সময় চেয়েছেন। শিক্ষার স্বার্থে তিনি অধ্যক্ষের বক্তব্য নিশ্চয়ই শুনবেন। তদন্ত কমিটিও সুষ্ঠু পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। সেই সব প্রস্তাবও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments