দলবদলে দণ্ডি কাটা, দিলীপে শরবিদ্ধ শাসক
top of page

দলবদলে দণ্ডি কাটা, দিলীপে শরবিদ্ধ শাসক

পঞ্চায়েত ভোটের আগে অযাচিতভাবে হাতে এসে গিয়েছে নতুন অস্ত্র৷ তাই আর দেরি নয়৷ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের পর এবার বালুরঘাটে আদিবাসী মহিলাদের দণ্ডি কেটে ঘরে ফেরানো নিয়ে শাসকদলকে বিঁধেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও৷ শনিবার পুরাতন মালদার বিলাসবহুল এক হোটেলে দলের তফশিলি মোর্চার দু’দিনের প্রদেশ প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে এসে তিনি তৃণমূলকে এই ইস্যুতে তুলোধোনা করেন৷ আরও একাধিক ইস্যুতে তিনি শাসকদল ও রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হন৷


Dilip-Ghosh-criticized-Trinamool-on-multiple-issues
বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ

বৃহস্পতিবার তপনের গোফানগর গ্রামপঞ্চায়েতের বাঁধ শনকইর গ্রামে প্রায় ২০০ জন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন৷ তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কোনও কারণে তাঁরা ফের পুরোনো দলে ফিরে আসেন৷ রাজনৈতিক মহল সাফ জানাচ্ছে, শাসকের রক্তচক্ষুর সামনে দাঁড়িয়ে পুরোনো দলে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ওই আদিবাসীরা৷ তবে পুরোনো দলে ফিরতে তৃণমূলের নেতাদের নিদান মেনে গতকাল রাতে বালুরঘাট শহরের রাস্তায় প্রায় এক কিলোমিটার দণ্ডি কেটে কয়েকজন আদিবাসী মহিলা তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেন৷ এতে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা খুশি হলেও সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় রাজ্য জুড়ে৷ এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আজ দিলীপ বলেন, “সভ্য সমাজে এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না৷ মমতা ব্যানার্জি বারবার বলেন, তিনি আদিবাসী ও মহিলাদের সঙ্গে রয়েছেন৷ অথচ তাঁর দলের লোকজনই দলের লোকদের ঘরে ফেরাতে দণ্ডি কাটার নিদান দিচ্ছে৷ আপনি তো রাজীব ব্যানার্জি, অর্জুন সিংদের দণ্ডি কাটাননি! তাঁরাও তো বিজেপিতে এসেছিলেন৷ পরে পুরোনো দলে চলে গিয়েছেন৷ আদিবাসীরা গরিব বলেই কি তাঁদের দণ্ডি কাটতে হবে? তৃণমূল কি এই চোখেই মহিলা কিংবা আদিবাসীদের দেখে? এই ঘটনায় প্রমাণিত, তৃণমূল দলিত বিরোধী পার্টি৷”

ডিএ আন্দোলন নিয়ে দিলীপবাবু বলেন, “সরকারি কর্মীরা নিজেদের হকের দাবিতে আন্দোলন করছেন৷ তাঁদের এই আন্দোলনে আমাদের সমর্থন রয়েছে৷ সরকার তাঁদের এই আন্দোলনকে গুরুত্ব না দেওয়ায় পরবর্তী সময়ে তার গতি ও শক্তি বেড়েছে৷ আদালতও মেনে নিয়েছে, তাঁদের এই আন্দোলন বৈধ৷ সেই কর্মীদের রাজ্য সরকার কুকুর-ছাগল, চোর-ডাকাতের সঙ্গে তুলনা করছে৷ এখন সরকারের অনুগামী অনেক সরকারি কর্মীও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন৷ অনেকে তৃণমূলের সদস্যপদ ছেড়ে দিয়েছেন৷ কারণ, সরকারি কর্মীদের এখন প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাজ করানো হয়৷"


বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন,

"তাছাড়া মমতা যদি টাকার দাবিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ধর্ণা দিতে পারেন, তবে তাঁর কর্মীরা হকের ডিএ-এর দাবিতে ধর্ণা দিতে পারবেন না কেন? এক যাত্রায় পৃথক ফল হয় নাকি?”

কুর্মি আন্দোলন নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতির বক্তব্য, “কুর্মিরা তাঁদের জাতিগত সংরক্ষণের জন্য আন্দোলন করছেন৷ প্রতিটি সমাজই সেটা করে থাকে৷ কিন্তু এর জন্য একটি কমিটি রয়েছে৷ তথ্য প্রমাণ দিয়ে সেখানে আবেদন করলে সব খতিয়ে দেখে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ গত সপ্তাহেও বেশ কিছু জনজাতিকে সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে৷”

কলকাতা কর্পোরেশনের পার্কিং ইস্যু এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে বড়ো চর্চা৷ সেপ্রসঙ্গে দিলীপের মন্তব্য, “আসলে মমতা ব্যানার্জি রাজ্যের উপার্জন বাড়াতে চান না৷ জিএসটি আদায়ে পশ্চিমবঙ্গের মতো বড়ো রাজ্য গোটা দেশে ১৩ নম্বরে৷ সেটা হবে কেন? উপার্জন বাড়াতে গেলে সরকারকে ট্যাক্স বাড়াতেই হবে৷ সেকারণেই ববি হাকিম পার্কিং ফি বাড়াতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু মমতা ব্যানার্জি রোজগার না বাড়িয়ে খরচা বাড়াবেন৷ কেন্দ্রের টাকায় স্ফূর্তি করবেন৷ তাই তিনি পার্কিং ফি বাড়ানো বন্ধ করেছেন৷ আসলে এই সরকারের মধ্যে কোনও সমন্বয়ই নেই৷ শুধু আন্দোলন করতেই ব্যস্ত৷”

এদিন মালদায় জাল নোট ও মাদক কারবার নিয়েও প্রতিক্রিয়া দিলীপ৷ তিনি বলেন,

“কালিয়াচক জাল নোট ও মাদক পাচারের করিডর৷ এই করিডর বন্ধ করা হচ্ছে না কেন? কেন সেটা করতে দেওয়া হচ্ছে না? আসলে রাজ্য সরকার না চাইলে এই কারবার কিছুতেই বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ আর এই রাজ্য সরকার সেটা করতে চাইছে না৷ হয়তো এদের লোকজনই এই কারবারের সঙ্গে জড়িত৷ এটা থেকে দলের ভালো আয় হচ্ছে৷ পার্টিও উপকৃত হচ্ছে৷ কিন্তু এর জন্য গোটা দেশের সুরক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে৷ তাই এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন৷ প্রয়োজনে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সহায়তারও দাবি করতে পারে৷”

আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page