বিষ বাতাসে মালদা
top of page

বিষ বাতাসে মালদা

ক’দিন আগের কথা৷ ফিরোজ শাহ কোটায় চলছিল ভারত-শ্রীলঙ্কা টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ৷ খেলা চলাকালীন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের মাস্ক পরে মাঠে নামার ছবি আজও ভুলেননি কেউ৷ সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা উদ্বেগ বাড়িয়েছে আবহবিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষেরও৷ ঠিক তার দু’দিন পরেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছিল কলকাতার বাতাসে বিষের খবর৷ দেখা গিয়েছিল, দূষণে দিল্লিকে টেক্কা দিয়েছে বাংলার রাজধানী৷ এনিয়ে ত্রাহি রব উঠেছে কলকাতায়৷ কীভাবে দূষণ কমানো যায়, তার সঠিক পথ বের করতে শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্লেষণ৷ এনিয়ে টেবিল বৈঠকে ঘণ্টাখানেক সময় কাটাচ্ছেন বিদ্বজ্জনেরা৷


Malda Air Pollution

এ’তো গেল দেশ আর রাজ্যের রাজধানীর দূষণ বৃত্তান্ত৷ কিন্তু কলকাতা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো কিলোমিটার দূরে থাকা মালদা কিংবা উত্তরের অন্যান্য জেলায় দূষণের অবস্থা কী, তার কি খেয়াল রাখছে কেউ? মালদা শহরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একটি আঞ্চলিক দপ্তর রয়েছে বটে, কিন্তু সেখানে কী কাজ হয়, তা জানা দুরূহ কাজ৷ ফলে এই জেলায় দূষণ ঠিক কোন পর্যায়ে, সেই সরকারি দপ্তর থেকে তা জানা যায়নি৷


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দপ্তরের এক কর্মীর কথায়, এখানে দূষণ মাপার তেমন যন্ত্রপাতিই নেই৷ তাই প্রতিদিন দূষণ মাপাও হয় না৷

দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মালদার দূষণও বেড়েছে৷ বাড়ছে দূষণ থেকে সৃষ্ট রোগের প্রাদুর্ভাব৷ মালদা মেডিকেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে অন্তত শ’চারেক মানুষ হাঁপানি সহ অন্যান্য দূষণ সৃষ্ট রোগ নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসেন৷ দুর্গাপুরে স্থিত সেন্ট্রাল পলিউশন কনট্রোল বোর্ড সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২৩ ডিসেম্বর মালদায় প্রতি ঘনমিটার বাতাসে নাইট্রোজেন ডাইক্সাইডের পরিমাণ ছিল ১৭.২ মাইক্রোগ্রাম, সালফার ডাইক্সাইড ছিল ১৪.০১ মাইক্রোগ্রাম এবং কার্বন ডাইক্সাইড ছিল ১৪২০ মাইক্রোগ্রাম৷ সূচক অনুযায়ী বাতাসে এই তিনটি গ্যাসের মাত্রা খুব একটা সমস্যার নয়৷ কিন্তু বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ সেই সূচক ছিল ৪৭৪.৮৯ মাইক্রোগ্রাম৷ যেখানে দিল্লিতে সেই সূচক ২৯২ কিংবা কলকাতায় ২৮৩ হলেই ত্রাহি রব ওঠে, সেখানে মালদার দূষণ ঠিক কোন পর্যায়ে, তা কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য থেকেই পরিষ্কার৷


দূষণে টেক্কাঃ

বাতাসে ধূলিকণা মালদায় ৪৭৪.৮৯ এমসিজি৷

দিল্লিতে ২৯২, কলকাতায় ২৮৩


পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, দিল্লির সঙ্গে এই রাজ্যের দূষণের বিপদ আলাদা৷ দিল্লি ও সংলগ্ন এলাকায় খেতের ফসল জ্বালিয়ে দেওয়ার জন্য বছরের এই সময় দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়৷ কিন্তু এই রাজ্যে দূষণ ছড়ায় মূলত গাছ কাটা, গাড়ির ধোঁয়া এবং দেদার ছড়িয়ে রাখা নির্মাণ সামগ্রী থেকে৷ পরিবেশবিদরা একমত, রাজ্য দূষণ পর্ষদ এসব বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলেই দূষণের মাত্রা দিন দিন বেড়ে চলেছে, তা কলকাতা হোক, কিংবা গঙ্গাপাড়ের এই জেলায়৷ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বর্তমান সময়ে দূষণ অকালে বহু মানুষের প্রাণ কাড়ছে৷ প্রশ্ন হচ্ছে, আর কত মানুষ মরলে ঘুম ভাঙবে সবার৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page