নিজস্ব প্রতিবেদন
Jul 15, 2021
কিন্তু বাঁচাবে কে? আজ থেকে নয়, অন্তত তিন দশক ধরে তাণ্ডবলীলা দেখছে জেলাবাসী। ধন বাঁচাতে, প্রাণ বাঁচাতে মাথা কুটে মরেছে সরকারের কাছে। কিন্তু কেন্দ্র না রাজ্য, নদীর পাড় রক্ষা কার কাজ, তা ঠিক হতেই কেটে গিয়েছে বছরের পর বছর। যদিও বা সেই কাজের ভাগবাঁটোয়ারা হয়েছে, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। অবশ্যই সঙ্গে রাজনীতি। যে মানুষের ভোটে জিতে লোকসভায় সরকার গঠন হয়েছে, সেই সরকার গঙ্গার রুদ্ররোষ থেকে অসহায় মানুষকে না বাঁচিয়ে মেতে উঠেছে সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণে। কিন্তু মানুষকে মেরে কি অমরত্ব পাওয়া যায়? প্রশ্ন থেকেই যাবে।
বিজেপি বিরোধীরা বলছে, যেহেতু গঙ্গার ভাঙন মূলত মালদা ও মুর্শিদাবাদের সমস্যা, তাই রাজ্য সরকারের উপরেই মানুষ বাঁচানোর ভার ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকারও কি গঙ্গাকে বেঁধে রাখার জন্য তেমন কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে? গঙ্গার পাড়ে গিয়ে এই প্রশ্ন করলেই উত্তর আসবে, না। ফিশফিশিয়ে অনেকেই বলবে, এখন শাসকদলের লোকজনের পকেটে কিছুটা রেস্ত ভরিয়ে দিতেই ভাঙন রোধের কাজ হয়। দশ টাকার কাজ বরাদ্দ হলে তিন টাকাও খরচ করা হয় কিনা সন্দেহ। তার উপর সব কাজ শুরু হয় বর্ষায়। আগে তবু বোল্ডার কিছু ফেলা হত। এখন ফেলা হচ্ছে বালি ভর্তি বস্তা। আসলে ভাঙন রোধের নামে গঙ্গাজলে গঙ্গাপুজোই হচ্ছে। কিন্তু শিরা ফুলিয়ে প্রতিবাদ করা যাবে না। প্রতিবাদীদের জায়গা কোথায় হয়, কারও অজানা নয়।
[ আরও খবরঃ দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে মিলল পচাগলা লাশ ]
এই জেলায় গঙ্গার ভাঙন মূলত ভাদ্র মাসে দেখা যায়। কিন্তু প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভাঙনের ক্যালেন্ডার যেন পালটে ফেলেছে নদীও। এবার আষাঢ়েই শুরু। প্রথমে ভূতনি, তারপর বৈষ্ণবনগরের লালুটোলা, সব শেষে মানিকচকের বালুটোলা। গঙ্গা গিলছে বাড়ি, গিলছে উর্বর, বহু ফসলি কৃষিজমিও। যে জান্নাত একসময় গঙ্গাপাড়ের মানুষকে আমির বানিয়েছিল, গঙ্গার রোষে সেই জান্নাতই এখন জাহান্নম। আমির থেকে গঙ্গাপাড়ের মানুষ এখন ফকির।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন