জঞ্জালের গ্রহণে শহর
top of page

জঞ্জালের গ্রহণে শহর

পুরভবনে ঢুকে চক্ষুচড়ক গাছ৷ চেয়ার-টেবলের সামনে ডাঁই করে জঞ্জাল রাখা৷ দুর্গন্ধে টেকা দায়৷ শহরের জঞ্জাল সাফাইয়ের দায়িত্ব যাঁর কাঁধে, সেই সাফাই পরিদর্শকের দপ্তরের সামনেই আবর্জনার স্তূপ৷ সাজানোগোছানো শহরটায় যেন জঞ্জালের গ্রহণ লেগেছে৷ কোথাও ভ্যাট উপচে রাস্তায় নেমে আসছে জঞ্জাল, কোথাও আবার নর্দমার পাড়েই আবর্জনার ছোটো ঘরটায় পাহাড় জমেছে৷ পাড়ায় পাড়ায় নিকাশিনালারও তথৈবচ অবস্থা৷ নালার মধ্যে অবাধে বংশবিস্তার করছে মশা৷ শহরের এমন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷



  • পাড়ায় পাড়ায় নিকাশিনালার তথৈবচ অবস্থা৷ সেখানে অবাধে বংশবিস্তার করছে মশা৷ শহরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

 
  • টনক নড়েছে প্রশাসনের৷ রাস্তায় আর জঞ্জাল ফেলা যাবে না৷ অলিতেগলিতে বাঁশি বাজিয়ে পৌঁছে যাবেন সাফাইকর্মীরা৷

 
  • এই শহরের অনেকেরই মজ্জাই ঢুকে গেছে যেখানে সেখানে জঞ্জাল ফেলার প্রবণতা৷ এইসব অভ্যাস একদিনে কাটাবার নই ঠিকই৷ প্রশাসনের তরফে ধারাবাহিক প্রচার চালানো হলে মানুষ সচেতন হবে৷


আর তাতেই টনক নড়েছে প্রশাসনের৷ কলকাতার ধাঁচে ইংরেজবাজারে জঞ্জাল সাফাইয়ের পরিকল্পনা নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ৷ রাস্তায় নাকি আর জঞ্জাল ফেলা যাবে না৷ অলিতেগলিতে বাঁশি বাজিয়ে পৌঁছে যাবেন সাফাইকর্মীরা, ই-রিকশা ভ্যানে আবর্জনা সংগ্রহ করে পৌঁছে যাবেন নির্দিষ্ট ভ্যাটে, যার প্রশাসনিক নাম পকেট ট্রান্সফার স্টেশন৷ ঠিক কতগুলো এধরনের ভ্যাট তৈরি করা হবে তার হিসেবনিকেশ এখনও চলছে৷ তার অর্থ হিন্দি স্কুলের কাছে অগোছালো ভ্যাটের অস্তিত্ব বিলোপ হবে৷ এই পরিকল্পনায় শহরে জঞ্জালের জট ছাড়ানো যাবে৷ বলে মনে করছে পুর কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকছেই৷ পুরসভা বলছে, রাস্তায় আর জঞ্জাল ফেলা যাবে না৷


কিন্তু এই শহরের অনেকেরই মজ্জাই ঢুকে গেছে যেখানে-সেখানে জঞ্জাল ফেলার প্রবণতা৷ নর্দমার মধ্যে আবর্জনা ফেলে অনেকেই৷ এমনকি নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নর্দমায় ফেলেন কেউ কেউ৷ আর তার ফলে নিকাশিনালার দফারফা হয়ে যায়৷ নিজের বাড়ির জঞ্জাল প্যাকেটবন্দি করে রাস্তার ধারে যেখানে-সেখানে রেখে দেওয়ার অভ্যাসটা অনেকের আছে৷ এইসব অভ্যাস একদিনে কাটাবার নই ঠিকই৷ কিন্তু প্রশাসনের তরফে ধারাবাহিকভাবে প্রচার চালানো হলে মানুষ সচেতন হবে৷ তাছাড়া জরিমানার ব্যবস্থা করে কড়াভাবে তা প্রয়োগ করতে হবে৷


বাবুল দাস, শহরের বাসিন্দা


"পরিচ্ছন্নতার বিষয়টা মন থেকে আসতে হবে৷ রাস্তার মাঝে লোকে থুতু ফেলে যাচ্ছে৷ শহিদ বেদির পিছনেও আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন অনেকে৷এটা সচেতনতার অভাব৷"

এই শহরের বাসিন্দা পিঙ্কি ঘোষ বলেন, আমি মাঝেমধ্যেই দেখি, আমার বাড়ির সামনে প্যাকেটে করে জঞ্জালে রেখে চলে গেছে কেউ৷ রাস্তার ধারে এইভাবে জঞ্জাল ফেলে রাখায় দূষণও ছড়ায়৷ শহর পরিষ্কার রাখা তো আমাদেরও দায়িত্ব৷ সকলকে বুঝতে হবে, রাস্তার ধারে যেখানে-সেখানে বা কারও বাড়ির সামনে জঞ্জাল ফেলে যাওয়া ঠিক নয়৷ বাবুল দাস নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, দেখুন অভ্যাসটা পালটাতেই হবে৷ শুধু জঞ্জাল ফেলা নয়, পরিচ্ছন্নতার বিষয়টা মন থেকে আসতে হবে৷ সরকারি অফিসকাছারির দেয়াল পানের পিকে লাল হয়ে থাকে৷ রাস্তার মাঝে লোকে থুতু ফেলে যাচ্ছে৷ নেতাজি মোড়ে দেখুন না, দোকানদাররা যে যার দোকানের জঞ্জাল রাস্তার ধারে জড়ো করে রাখেন৷ এমনকি সমবায় দপ্তরের শহিদ বেদির পিছনেও আবর্জনা ফেলে দিচ্ছেন অনেকে৷ এটা সচেতনতার অভাব৷ পুর প্রশাসনকে নজরদারিও চালাতে হবে৷ সচেতনতামূলক প্রচারও চালাতে হবে৷



তবে পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের আশা, নতুন পদ্ধতিতে জঞ্জাল সংগ্রহ করলে শহরের সমস্যা অনেকটা মিটবে৷ তবে শহরের জঞ্জাল পকেট ট্রান্সফার পয়েন্টে নিয়ে গিয়ে পাম্প বানলেও তা ভ্যাটে নিয়ে যাওয়া নিয়ে সমস্যা থাকছে৷ কারণ পুরসভার বাইরে স্থায়ী ভ্যাট নিয়ে সমস্যা এখনও থেকে গেছে৷ তাছাড়া পুর নজরদারি না থাকছে, অনেকেই রাস্তাঘাটে যত্রতত্র জঞ্জাল ফেলে পগারপার হয়ে যাচ্ছে৷


ছবিঃ গৌতম কর্মকার।

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page