top of page

পুজো দেখতে জমায়েতের অনুমতি নেই, মিশনের কুমারী পুজো লাইভ সম্প্রচারে

১৮৯৭ সাল৷ সারা দেশে ধর্মজাগরণের দোল৷ কিন্তু ধর্মের পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে তো জড়িয়ে রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, একের পর এক শব্দও! এসবের কী হবে? এতকিছু ভেবে কূলকিনারা করতে পারছিলেন না বিলে৷ রামকৃষ্ণের বিবেকানন্দ৷ তাঁর মাথায় আরও রয়েছে, সাধক ধর্মের গভীরে যায় নিজের সাধনায়৷ কিন্তু গৃহস্থ মানুষ সংসারের পাঠ সামলে কীভাবে সেই সাধনায় নিজেকে নিমজ্জিত করবে? এসব ভাবনা থেকেই ১৮৯৭ সালের ১ মে কলকাতা সংলগ্ন বেলুড়ে স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠা করলেন রামকৃষ্ণ মিশন৷ সংঘবদ্ধ সন্ন্যাসী ও গৃহস্থ শিষ্যদের মিলিত কর্মযোগ কেন্দ্র৷

গৃহস্থ মানুষকে নিয়ে পথ চলা শুরু করল রামকৃষ্ণ মিশন৷ বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব, দুর্গাপুজোকেও এই যজ্ঞে শামিল করলেন স্বামী বিবেকানন্দ৷ ১৯০১ সালে আশ্রমে শুরু হল দুর্গাপুজো৷ সেবছর থেকেই কুমারীপুজোও শুরু হয় রামকৃষ্ণ মিশনে৷ মহাষ্টমী তিথিতে বেলুড় মঠে একসঙ্গে ন’জন কুমারীকে দেবীরূপে পুজো করা হয়েছিল৷ সারদামায়ের উপস্থিতিতে স্বয়ং বিবেকানন্দ এই নয় ব্রাহ্মণকন্যাকে পুজো করেন৷ তখন থেকেই রামকৃষ্ণ মিশনের দুর্গাপুজোয় কুমারীপুজো অন্তর্ভুক্ত হয়৷

মালদা রামকৃষ্ণ মিশনেও দুর্গাপুজোর শুরুর সময় থেকে কুমারীপুজোর আয়োজন হয়ে আসছে৷ শুধু মিশনের ভক্তরাই নয়, এই পুজো দেখতে প্রতি বছর সপ্তমী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত আশ্রমে ভিড় জমায় লাখো মানুষ৷ মহাষ্টমীর সকালে ১০ বছরের কম বয়সী কুমারীর সামনে সন্ন্যাসীদের উদাত্ত গলায় যখন ‘ওঁ মহিষঘ্নি, মহামায়ে, চামুণ্ডে, মুণ্ডমালিনী, আয়ুরারোগ্যবিজয়ং দেহি, দেবী নমোহস্তুতে...এষ সচন্দনগন্ধপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলিঃ, ওঁ হ্রীং দুর্গায়ৈ নমঃ...’ মন্ত্রোচ্চারিত হয়, তখন সামনে থাকে কয়েক হাজার মানুষ৷ পুজো শেষে উপস্থিত সবাই সেখানে বসে প্রসাদ খেয়ে বাড়ি ফেরে৷ মালদায় রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর দুর্গাপুজোয় এই দৃশ্য দেখেই অভ্যস্ত সবাই৷ কিন্তু করোনা এবার সেই দৃশ্য ঢেকে দিতে যাচ্ছে৷


Ramakrishna Mission to live stream Kumari Puja
এবার মন্দিরের বারান্দায় কুমারীপুজো করা হবে না

মালদা রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ত্যাগরূপানন্দজি মহারাজ বলেন,


করোনা আবহেই এবার আশ্রমে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হতে চলেছে৷ এনিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা একটি বৈঠক করেছি৷ বেলুড় মঠ থেকেও পুজো নিয়ে কিছু নির্দেশ এসেছে৷ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পুজোর দিনগুলিতে মন্দিরে ভিড় কমাতে আমরা এবার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ মহাষ্টমীর দুপুরে আমরা এখানে সবাইকে খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানো এবার বন্ধ রাখা হচ্ছে৷ অন্য বছরগুলির মতো এবার মন্দিরের বারান্দায় কুমারীপুজো করা হবে না৷ সেই পুজো হবে মন্দিরের ভিতরে৷ ফলে মন্দিরের সামনে জমায়েতের কোনও প্রশ্ন থাকছে না৷ দর্শকরা কেউ মন্দিরের ভিতরে ঢুকতে পারবেন না৷ সেখানে বসার কোনো ব্যবস্থাও থাকছে না৷ ভক্তরা মন্দিরের মূল দরজা দিয়ে ভিতরে ঢুকে প্রণাম করে, দ্বিতীয় দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাবেন৷



স্বামী ত্যাগরূপানন্দজি মহারাজ আরও বলেন, করোনার জন্য আমরা এখনও কুমারীর নাম প্রকাশ্যে আনছি না৷ কারণ, এখানে ১০ বছরের কম বয়সী মেয়েদেরই কুমারী করা হয়৷ আমরা দেখেছি, আগে তার নাম জানাজানি হলে তার বাড়িতে ভিড় জমে৷ এবার তেমন হলে তার সুরক্ষা বিঘ্নিত হতে পারে৷ তার পরিবারের সদস্যরাও সমস্যায় পড়তে পারেন৷ করোনা সংক্রমণের জন্য এবার আমরা আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ এবার ভক্তরা বাড়িতে বসেই যাতে পুষ্পাঞ্জলি দিতে পারেন, তার জন্য আমরা ভার্চুয়াল ব্যবস্থা করেছি৷ ইউটিউব ও ফেসবুক লাইভে পুষ্পাঞ্জলির মন্ত্র পাঠ করা হবে৷ ভক্তরা চাইলে ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে আমাদের অর্থ সাহায্য করতে পারেন৷ কারণ, করোনার জন্য এবার আমরা দুর্গাপুজোর অর্থ সংগ্রহও ঠিকমতো করতে পারিনি৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page