জৈব উপায়ে উৎপাদিত আম নিয়ে সরাসরি ক্রেতার কাছে সরকারি ফার্ম
top of page

ক্রেতার কাছে জৈব উপায়ে উৎপাদিত আম

ভারতে প্রায় ১৫০০ প্রজাতির আম পাওয়া যায়৷ আর মালদায় মেলে আড়াইশো রকমের আম৷ পাশের জেলা মুর্শিদাবাদও পিছিয়ে নেই৷ প্রায় একশো পঁচিশ প্রজাতির আম নবাবের জেলাতে গেলে আজও পাওয়া যাবে৷ ল্যাংড়া, হিমসাগরের মাঝে মন হারিয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু আমের স্বাদ পেতে গেলে আম্রপালী, রানিপসন্দ বা গোপালভোগের সঙ্গে জিহ্বের পরিচয় ঘটাতেই হবে৷ মালদার আমের তালিকাটা আরও লম্বা৷ কে নেই সেখানে -- সৌরিখাস, রুমানী, মিছরীখণ্ড, সুবর্ণরেখা, মল্লিকা, বৃন্দাবনী, লিচু আম, নাকুভোগ-- আরও কত কী৷ কিন্তু বাজারে গেলে তো এতরকমের আমের দেখা মেলে না৷ সেখানে যে গুটিকয় প্রজাতিই কবজা করে রেখেছে৷


অবশেষে মুশকিল আসানে এগিয়ে এসেছে রাজ্য সরকার৷হাতের গোড়ায় রসাল, সুস্বাদু আমের ডালি তুলে দিতে এই শহরেই রীতিমতো দোকান খোলা হয়েছে৷শুভঙ্কর বাঁধরোডের একপাশে রমরমিয়ে চলেছে সেই দোকান৷

এক একটা বাস্কেটে এক-এক ধরনের আম, হাতছানি দিয়েছে মনকে৷ সব থেকে বড়ো বিষয় হল এসব আম পুরোপুরি জৈবিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে৷ কোনোরকম কীটনাশক তো ব্যবহার হয়নি, এমনকি আধকাঁচা আম অকালে পাকাতে কার্বাইডের মতো বিষের ব্যবহারও হয়নি এতটুকু৷ অন্তত জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের দাবিটা এমনই৷

মালদায় ফার্মের ৭০ বিঘা জমিতে এই আম চাষ হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় আম গবেষণা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্সটিটিউট অফ সাব ট্রপিক্যাল হর্টিকালচার নামে একটি সংস্থা জৈব পদ্ধতিতে ফার্মের আম গাছগুলির পরিচর্যা করে৷ এবছর ৭০ বিঘা জমিতে ৭০ প্রজাতির আম চাষ করেছে ফার্ম৷ আর সেইসব হরেক স্বাদের আম বাঁধরোডের পাশে অস্থায়ী দোকানে সাজানো থেকেছে আমবিলাসী বাঙালির জন্য৷ হাতে করে নেড়েচেড়ে, এমনকি খেয়ে চেখেও পরখ করে নেওয়ার সুযোগ ছিল এখানে৷ কোনোটা ৩০ টাকা, তো ২৫ টাকা কিলো দরে বিকোচ্ছে হুহু করে৷ তবে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য সেই দোকান কিছুদিন উদ্বাস্তু শিবিরে নাম লেখায়৷ উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, অস্থায়ীভাবে আমের দোকান বসছে জেলা প্রশাসনিকভবন চত্বরে৷

কাঁচা আম ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে৷ আর পাকা আম দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, বদহজম ও রক্তাল্পতা দূর করে৷ হৃৎযন্ত্রকে সচল রাখতেও আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এখানেই শেষ নয়, বিশেষজ্ঞদের দাবি, প্রস্টেট ক্যানসার রোধে আমের ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই৷ কিন্তু খোলা বাজারে যে সব আম কিনছেন সবটাই কি নিরাপদ?

অকালে আম পাকাতে ও ফলন বাড়াতে যে পরিমাণ কীটনাশক ও কার্বাইডের ব্যবহার হয়, তা মানবদেহের পক্ষে কিছুটা হলেও ক্ষতিকারক৷ শুধু এই কারণেই বিদেশের বাজারে মালদার আমের সুনাম নষ্ট হচ্ছে৷ সম্পূর্ণ জৈব উপায়ে উৎপাদিত আমের স্বাদ দিতে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে সরকারি ফার্ম৷ আমের হোম ডেলিভারিও চালু হয়েছে৷ তবে এক্ষেত্রে ২০ কেজির বেশি আম কিনতে হবে, তাহলেই বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে আম৷ গত মরশুমে ৭০ বিঘা জমিতে উৎপাদিত আম নিলামে তুলে ৩ লক্ষ টাকার সামান্য বেশি ঘরে উঠেছিল৷ আর এবার ওই পরিমাণ জমিতেই উৎপাদিত আম নিলাম করে ১১ লক্ষ ১১ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে৷ নিলামের পর সরকারি ব্র্যান্ডে সেইসব আম বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ছবিঃ মিসবাহুল হক

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page