কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোটগ্রহণে ‘না’ ভোটকর্মীদের
মালদা শহরের ফোয়ারা মোড়ে বিক্ষোভ দেখালেন ভোটকর্মীরা৷ শুক্রবার সন্ধেয় প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী না থাকলে ভোটগ্রহণ নয়৷ এই ইশ্যুতে ভোটকর্মীরা আন্দোলনে নামেন৷ তাঁরা শহরের প্রাণকেন্দ্র ফোয়ারা মোড়ে জমায়েত হন৷ সেখানে একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন তাঁরা৷
আমরা কেউ নাম কাটানোর জন্য এখানে আসিনি
ভোটকর্মীদের পক্ষে এক শিক্ষক দেবব্রত মিত্র বলেন, বিগত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমাদের সুখকর নয়৷ ইতিপূর্বে ভারতবর্ষে অনেক নির্বাচন হয়েছে৷ প্রাক্তন জাতীয় নির্বাচন কমিশনার টিএন শেষন ও রাজ্যের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে খানিকটা হলেও দেখিয়ে দিয়েছিলেন, কীভাবে মেরুদণ্ড সোজা রেখে নির্বাচন করতে হয়৷ কিন্তু গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছে, যার মাধ্যমে শাসকদল ক্ষমতায় এসেছে, তারা যদি সত্যিই কাজ করত, তাহলে এভাবে নিরাপত্তাকর্মীদের ভয় দেখিয়ে ভোট লুট করে জিততে হত না৷ কাজের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় আসত৷ আমরা নিরপেক্ষ ভোটকর্মী৷ আমরা ভোট নিতে যেতে ইচ্ছুক৷ কিন্তু আমাদের বুথে যাতে মাছি গলতে না পারে তার জন্য পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী চাই৷ আমরা সেই দাবি করছি৷ আমরা কেউ নাম কাটানোর জন্য এখানে আসিনি৷ আগে বার বার বলা হয়েছে, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে৷ এখন শুনছি সেটা হবে না৷ পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে ভোট করা হচ্ছে কেন? পুলিশের উপর আমাদের কোনও ভরসা নেই৷
জীবনকে বাজি রেখে আমরা ভোট নিতে যেতে চাই না
ভোটকর্মীদের পক্ষে এক শিক্ষক বলেন, আমরা প্রত্যেকে ভোটকর্মী৷ আমাদের মধ্যে যেমন শিক্ষক রয়েছেন, তেমনই সরকারি কর্মীরাও রয়েছেন৷ আমরা প্রত্যেকেই ভোট নিতে যেতে ইচ্ছুক৷ এটা আমাদের দায়িত্ব, কর্তব্য৷ কিন্তু আমাদের সুরক্ষা আগে৷ ভারতীয় সংবিধানের দ্বিতীয় পরিচ্ছদে আমাদের জীবনকে আগে মূল্য দেওয়া হয়েছে৷ আমরা চাই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতিতে প্রতিটি বুথে যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট নিতে পারি৷ জীবনকে বাজি রেখে আমরা ভোট নিতে যেতে চাই না৷ বিভিন্ন তথ্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি, কোচবিহারের প্রায় ৬০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী থাকছে না৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে এখন রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তার উপর আমাদের কোনও ভরসা নেই৷ যদি সেই নিরাপত্তা থাকত, তবে ভোট নিতে গিয়ে রাজকুমার রায় মারা যেতেন না৷ আমরা আর কেউ রাজকুমার রায় হতে চাই না৷ নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা আমরা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি৷ আজ আমরা নিজেদের গণ স্বাক্ষর সংবলিত দাবিপত্র জেলাশাসকের কাছে জমা দিচ্ছি৷
Comentarios