কালাকান্দি-সইফ অনবদ্য কিন্তু হোয়াট ইজ দা মিনিং অব অল দিস?
top of page

কালাকান্দি-সইফ অনবদ্য কিন্তু হোয়াট ইজ দা মিনিং অব অল দিস?

কালাকান্দি- ছবির নাম শুনে আপনার কালাকাঁদ মিষ্টির কথা মনে আসতে পারে, কিন্তু এ ছবির সঙ্গে কোনরকম মিষ্টির কোন সম্পর্ক নেই। কালাকান্দি মারাঠি স্ল্যাং, যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়- গড়বড় বা গণ্ডগোল হয়ে যাওয়া। ২০১১-এর 'ডেলহি বেলি'র কাহিনীকার আক্ষাত বর্মার পরিচালক হিসেবে প্রথম ছবি এই কালাকান্দি।

বেশ কয়েকটি ন্যারেটিভ নিয়ে 'এক রাতের গল্প'-র ফরম্যাটে প্লট তৈরি হয়েছে। মুম্বাই এর বিভিন্ন জায়গার বিভিন্ন স্ট্যাটাসের চরিত্ররা ন্যারেটিভ তৈরি করেছে। সেই রাতে প্রতিটি প্রধান চরিত্র কোনও না কোনও সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সইফের চরিত্রটি সদ্য জানতে পেরেছে তাঁর ক্যানসার হয়েছে, তাঁর ভাই অঙ্গদ (অক্ষয় ওবেরয়) নিজের বিয়ের রাতে মানসিক দ্বন্দ্বে বিদ্ধ। ওদিকে শোভিতা ধুলিপালা (রামন রাঘভ ২.০ খ্যাত) তাঁর বয়ফ্রেন্ডকে ছেড়ে বোস্টন যাবে পিএইচডি করতে। কিন্তু সেই রাতে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। অন্যদিকে দুই অপরাধী (এই দুই চরিত্রে দীপক দবরিয়াল আর বিজয় রাজ অনবদ্য) সেই রাতে তাদের সবচে বড় তাসটা খেলে একসঙ্গে অনেক টাকার মালিক হতে চায়। শুরু হয় জার্নি। এই জার্নিতে কিছু সময় কাটিয়েছে এক সুন্দরী ফটোগ্রাফার (ঈশা তলোয়ার), একজন বৃহন্নলা (ন্যারি সিং), কিছু পুলিশ আর মুম্বাই এর বৃষ্টি!


কালাকান্দি-সইফ অনবদ্য কিন্তু হোয়াট ইজ দা মিনিং অব অল দিস?

এই এক রাতের জার্নিতে প্রত্যেকটি ন্যারেটিভ একে অপরকে অতিক্রম করে এবং কিছু ক্ষেত্রে না জেনে একে অপরের ভাগ্যের নির্ধারকও হয়ে ওঠে। জীবন অ্যাবসার্ড। চরিত্রগুলো ভাবে এক আর জীবন তাদের নিয়ে যায় অন্যদিকে। সব গড়বড় হয়ে যায়। জীবন চরিত্রগুলো নিয়ে খেলে। পরিচালক পাঞ্চ করে দেন সিচুয়েশনাল কমেডি। কখনও যদিবা চরিত্রগুলো লাগাম হাতে নিতে যায়, শেষ অবধি তা আর হয়না, সব তাৎপর্য হীন হয়ে যায়, জীবন নিজের মত করে তাৎপর্য তৈরি করে নেয়। কালাকান্দি অন্তত তাই বলে।

অভিনেতারা প্রত্যেকে ভাল। সইফের অভিনয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছিল তাঁর চরিত্র। ইমেজের তোয়াক্কা না করে বেশ সাহসী অভিনয় করেছেন। অসহায়তা, বেদনা, ধৃষ্টতা সব মিলে সইফ অনবদ্য। বৃহন্নলার সঙ্গে সইফের সম্পর্ক যৌনতাকে ছাপিয়ে এক মানবিক সংযোগ তৈরি করে। সইফ যখন সেই বৃহন্নলাকে বলে, 'হামকো আপকে সামান কে বারেমে কিউরিওসিটি হে'- আমরা অফেনডেড হইনা। ছবির শেষদিকে এক মহিলাকে চুমু দেবার পর সে জিজ্ঞেস করে, 'হোয়াট ইজ দা মিনিং অব অল দিস?' বিশেষ পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন যে কেবল অস্তিত্ব সর্বস্ব, আর কিছুই নয়, সইফের চরিত্রটা যেন তারই প্রতীক। সেই কারণে সারা ছবি জুড়ে আমরা তাঁর চরিত্রের নাম জানতে পারিনা। নামে কি এসে যায়! ছবির একেবারে শেষে এসে সইফ নামটা বলে, কিন্তু খুব পরিষ্কার করে নয়। নামটা খুব পরিষ্কার বোঝা না গেলেও, সামগ্রিকভাবে জীবন যে একেবারেই অর্থহীন নয়, এটা বোঝানোর জন্য এটুকুর দরকার ছিল।

কিন্তু এই 'নোয়ার অ্যাটমসফিয়ার', ব্ল্যাক কমেডি সুধীর মিশ্রের মত পরিচালকেরা দিয়েছেন। সেইদিক থেকে দেখতে গেলে আক্ষাত বর্মা কালাকান্দি তে কোন 'নভেলটি' দিতে পারেননি। ছবিটা ক্ষেত্রবিশেষে সফল কিন্তু সেই অর্থে গভীর বা আরও উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারেনি, বেশিরভাগ সময়েই নির্জীব। প্রতিটি চরিত্র তাদের আলো-আঁধারি নিয়ে সত্য কিন্তু পরিপূর্ণ জীবন্ত নয়। ছবির বেশিরভাগটা জুড়ে পরিচালক কৌতুক ধরে রাখতে পারেননি। মাত্র এক ঘণ্টা চল্লিশ মিনিটের এ ছবিতেও মাঝে মাঝে চোখে আলস্য আসে।

তবুও অফ-বিট বলিউড অভিজ্ঞতা পেতে এ ছবি দেখতে পারেন। কম খরচে তৈরি এ ছবি অন্তত বাণিজ্যিক পণ্য নয়। আমার রেটিং ৫ এ ২.৫।


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page