সচেতনতাই বাঁচার অঙ্গ, হুল ফোটাচ্ছে ডেঙ্গু
জ্বরে কাবু শহর থেকে গ্রাম৷জ্বরে কাঁপছে কাউন্সিলার থেকে সাংবাদিকদের পরিবার৷কখনো গলা ব্যথা দিয়ে শুরু, কখনো মাথায় অসহ্য যন্ত্রণায় ভর দিয়ে শরীরে জ্বরের অনুপ্রবেশ৷সর্দি-গরমির এমন জ্বরেই ডেঙ্গুর আতঙ্কে ভুগছেন মালদা শহরের বহু বাসিন্দা৷কারণ সাধারণ জ্বরের ছদ্মবেশেই মানব শরীরে ঢুকে পড়ছে ডেঙ্গু৷ছোটো মশার দাপাদাপিতে ডেঙ্গুর শিকার রোগী প্রথমে টেরই পাচ্ছে না, যে তার ডেঙ্গু হয়েছে৷অনেক ক্ষেত্রে রোগের জটিলতা বাড়িয়ে শেষ মুহূর্তে ডাক্তারের কাছে ছুটছে রোগী৷
জ্বর মানেই ডেঙ্গু নয়, আবার জ্বর হলেও হেলাফেলা নয় - বলছেন চিকিৎসকরা৷চোখের পেছনে ব্যথা, তাপমাত্রা খুব বেড়ে যাওয়া (১০৩-১০৪ ডিগ্রি), জ্বরের সঙ্গে হেমারেজ ইত্যাদি উপসর্গ থাকে ডেঙ্গুতে৷মালদা মেডিকেল কলেজের সুপার অমিত দাঁর বক্তব্য, ‘ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই৷প্রাথমিক পর্যায়ে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে প্রতিদিন পরিমাণ মতো জল ও মৌসুমি ফলের রস খেতে হবে৷তাহলেই রোগ সেরে যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে৷ আর বিশ্রাম নেওয়াটাও আবশ্যিক৷
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-২ অমিতাভ মণ্ডল বলছেন, ‘নর্দমার জলে ডেঙ্গুর বাহক মশার উৎপত্তি হতে পারে৷’ কীভাবে? বললেন, ‘নোংরা নীচে বসে গেলে ওপরে স্বচ্ছ জলে ও প্রবহমান জলে ডেঙ্গু মশার লার্ভা দেখা যায়৷এজন্য সচেতনতা দরকার৷ মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন৷ডেঙ্গু মশা সাধারণত সকালে বা সন্ধ্যার দিকে কামড় দেয়৷’
ডেঙ্গু হচ্ছে৷কিন্তু আতঙ্কিত হয়ে কাজ হবে না৷বরং প্রয়োজন সচেতনতার৷ পুরসভা বলছে, ‘একটু সচেতন থাকলেই তো ডেঙ্গু হয় না৷অনেকেই বাড়িতে জল জমিয়ে রাখেন৷টবে, ফ্রিজে বা বালতিতে পরিষ্কার জল জমে থাকলেও ডেঙ্গুর মশা বংশবিস্তার করতে পারে৷’ নাগরিকদের সচেতন করতে মাইকিং করছে পুরসভা৷ ফগিংও করা হচ্ছে৷তবে পুরসভা যাই বলুক, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কিন্তু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে৷যদিও জেলাশাসক বলছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোটেও উদ্বেগজনক নয়৷
মালদা শহরই শুধু নয়, কালিয়াচক, মানিকচক, পুরাতন মালদা শহরের অন্তত ৫ কাউন্সিলারের পরিবারেই কেউ না কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত৷ মকদুমপুর পুরবাজারে প্রায় ৪০ জন ছোটো ব্যবসায়ীর ডেঙ্গু হয়েছে বলে দাবি করেন মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের মালদা জেলা সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু৷ এত সবের পরেও অবশ্য প্রশাসনের বক্তব্য, গোটা জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাটা ২৪০৷পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে৷অন্যান্যবারের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ কম৷
এবিষয়ে উপপুরপ্রধান দুলাল সরকারের বক্তব্য, ‘জ্বর মানেই ডেঙ্গু নয়৷কিছু কিছু জায়গা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের খবর আসছে বটে, তবে মোটেও তা উদ্বেগজনক নয়৷পুরসভা মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করছে৷সাধারণ মানুষকেও সচেতন করা হচ্ছে৷আতঙ্কের কোনো কারণ নেই৷
তবে পুরসভার বিরোধী দলনেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবিষয়ে একমত নয়৷তিনি বলছেন, ‘মালদা শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাটা হু হু করে বাড়ছে৷সঠিক তথ্য প্রকাশ করলেই জানা যাবে যে আক্রান্তের সংখ্যাটা জেলায় হাজার ছাড়িয়ে গেছে৷’
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments