top of page

মেয়েকে নিয়ম বহির্ভূত ভর্তির অভিযোগ মালদা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

নিয়ম বহির্ভূতভাবে কলেজে ভর্তি নেওয়ার অভিযোগ উঠল মালদা কলেজে। অভিযোগ অধ্যক্ষ নিজের মেয়েকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজেরই কলেজে ভর্তি করেছেন। এনিয়ে এক ছাত্র গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। যদিও অধ্যক্ষের দাবি তিনি কোনও বেআইনি কাজ করেননি। গোটা ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কলেজে। এনিয়ে জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ দায়ের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাপস চৌধুরি নামে ওই অভিযোগকারী এদিনই নিজের অভিযোগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, মালদা কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করা হয়েছিল, ওই কলেজে ফিজিক্স বিভাগে ভর্তি হতে গেলে কমপক্ষে ৮৫.৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করেই অনলাইন প্রক্রিয়ায় কলেজে ভর্তি হন পড়ুয়ারা। নির্দিষ্ট নম্বর না থাকায় অনেক মেধাবী পড়ুয়া সেখানে হর্তি হতে পারেনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ৮৩.৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়েও ওই কলেজে ফিজিক্স অনার্স পড়ার সুযোগ পেয়েছেন অধ্যক্ষ উত্তম সরকারের মেয়ে নাতাশা সরকার। তাপসের অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই কাজ করেছেন অধ্যক্ষ। এই ঘটনাতেই প্রমাণ, মালদা কলেজকে স্বজনপোষণের মাত্রাটি ঠিক কোন জায়গায় এসে পৌঁছেছে। তবে এই ঘটনা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। সঠিক তদন্ত হলে মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষের আরও অনেক বেআইনি কাজ সাধারণ মানুষের সামনে উঠে আসবে। তাই তিনি এই অভিযোগের দ্রুত ও যথাযথ তদন্তের জন্য উপাচার্যের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।


"কলেজে ফিজিক্স বিভাগে ভর্তি হতে কমপক্ষে ৮৫.৫ শতাংশ নম্বর পেতে হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ৮৩.৩৩ শতাংশ নম্বর পেয়েও ফিজিক্স অনার্স পড়ার সুযোগ পেয়েছেন অধ্যক্ষ উত্তম সরকারের মেয়ে নাতাশা সরকার"

এপ্রসঙ্গে মালদা কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের কলেজের গভর্নিং বডির রেজুলেশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের পরেও কলেজকর্মীদের মেধাবী ছেলেমেয়েদের জন্য একটি আসন বরাদ্দ রয়েছে। সেই রেজুলেশন সংক্রান্ত যাবতীয় নথি তাঁদের কাছে রয়েছে। বর্তমানে মালদা কলেজে ফিজিক্স অনার্সে আসন রয়েছে ২৯টি। সেই মতো অনলাইনে তাঁরা ২৯ জন পড়ুয়াকে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নিয়েছেন। এরপর কলেজের রেজুলেশন অনুযায়ী তাঁর মেয়ে ৩০ নম্বর পড়ুয়া হিসেবে ওই বিভাগে ভর্তি হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি কোনও আইন বিরুদ্ধ কাজ করেননি।

এদিন তাপস চৌধুরির অভিযোগের প্রাপ্তি স্বীকার করেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত সহকারী রেজিস্ট্রার অরিজিত দাস। তবে তিনি জানান, এবিষয়ে যথাযথ জানাতে পারবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্পেকটর অফ কলেজেস অপূর্ব চক্রবর্তী। অপূর্ববাবু অবশ্য পরিষ্কারই জানয়েছেন, এভাবে কোনও কলেজ কর্তৃপক্ষ নিজেদের ঘরের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করতে পারে বলে তাঁর জানা নেই। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।

গোটা বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কলেজের প্রশাসক তথা জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি বাবুল শেখ। জেলাশাসককে তিনি জানিয়েছেন, নাতাশা সরকার জুলজি ও ফিজিক্স অনার্স কোর্সে ভর্তির আবেদন করেছিলেন। মালদা কলেজের প্রকাশিত মেরিট লিস্ট অনুযায়ী জুলজি অনার্সে তাঁর নাম রয়েছে ৬৪ নম্বরে। ফিজিক্সে ৯০ নম্বরে। এতেই প্রমাণিত হচ্ছে, ভর্তি নিয়ে মালদা কলেজে স্বজনপোষণ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

মালদা কলেজ ও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঝামেলাই এসবের মূল কারণ বলে অনেকে মত প্রকাশ করেন। সম্প্রতি মালদা কলেজের বারান্দা ও সাইকেল স্ট্যান্ডে পরীক্ষাগ্রহণ নিয়ে তোলপাড় পড়েছিল শিক্ষামহলে। সেই সময় বিদ্যালয়ের আধিকারিকদের একাংশ গোটা ঘটনার জন্য উত্তমবাবুকেই দায়ী করেছিলেন। তবে এবার উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তার জল অনেকদূর গড়াবে বলে মনে করেছেন অনেকেই।


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments

Couldn’t Load Comments
It looks like there was a technical problem. Try reconnecting or refreshing the page.

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page