আমাদের মালদা ডিজিট্যাল

May 23, 2020

গাজোলে কোয়রান্টিন সেন্টারে শ্রমিকের মৃত্যু, আতঙ্ক এলাকায়

Updated: Aug 11, 2020

কোয়রান্টিনে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল গাজোলে৷ মৃত শ্রমিকের নাম সুরেশ সাহা (৩৫)৷ বাড়ি গাজোলের বাজবহর গ্রামে৷ মৃত শ্রমিক করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে জেলাপ্রশাসন৷

গতকাল রাতের শেষ রিপোর্ট অনুযায়ী মালদা জেলায় মোট করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ৬৪। এর মধ্যে গাজোল ব্লকে প্রথম সংক্রামিত রোগীর হদিশ পাওয়া গিয়েছিল শাহজাদপুর অঞ্চলের লক্ষ্মীপুর এলাকার পাগলা কুড়িগ্রামে। এরপর তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল গাজোলে। সেই আতঙ্কের আবহে গতকাল মাঝরাতে কোয়রান্টিন সেন্টারে এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জানা যায়, মৃত ওই শ্রমিকের নাম সুরেশ সাহা (৩৫)। বাড়ি গাজোলের চাকনগর অঞ্চলের বাজবহার গ্রামে। এই কথা জানতে পেরে, ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসা পর যে সমস্ত শ্রমিকদের এখনও শারীরিক পরীক্ষা হয় নি যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।

ঘটনাটি ঘটেছে গাজোল ব্লকের চাকনগর অঞ্চলের কাটিকান্দর প্রাইমারি স্কুলে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কোয়রান্টিনে থাকা শ্রমিক ও এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভিনরাজ্যে কাজ করতেন সুরেশ। গত তিনমাস আগে মহারাষ্ট্রের পুনেতে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে বাড়ি তৈরির সাটারিং-এর কাজ করতেন তিনি। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় বউ ও দুই ছেলেকে রেখে কাজ করতে যান। লকডাউনের প্রথমদিকে ফিরতে পারেননি তিনি। দফায় দফায় লকডাউন বেড়ে যাওয়ায় অবশেষে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে গত ২০ মে তারিখে ট্রাকে চেপে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। এরপর বিনা শারীরিক পরীক্ষায় তাকে কাটিকান্দর প্রাইমারি স্কুলে ৫০ জন শ্রমিকের সাথেই কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। অবশ্য ফিরে আসার পর কোনও শারীরিক অসুবিধা দেখা দেয়নি তাঁর। গতকাল রাতে খাওয়া-দাওয়া সেরে শুয়ে পড়েন তিনি। মাঝরাতে দুটো নাগাদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কিছুক্ষণ পরেই মারা যান তিনি। তবে কী কারণে মৃত্যু হয়েছে সদুত্তর মেলেনি এখনও।

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে গাজোল থানার পুলিশ। মৃতের করোনা উপসর্গ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে, লালারস সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়৷ এবিষয়ে জেলা প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷

এ বিষয়ে গাজোল বিধানসভার বিধায়িকা দীপালি বিশ্বাস জানান, ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। চরম আতঙ্ক রয়েছে এখন এলাকাতে। তবে তিনি জানতে পেরেছেন, কিছুদিন আগেই এলাকায় ফিরে এসেছিলেন সুরেশ। তাঁর কোনও শারীরিক অসুস্থতা ছিল না। মৃত ব্যক্তির লালারস সংগ্রহ করে সঠিক তদন্ত করতে বলেছেন স্বাস্থ্য দফতরকে। পাশাপাশি এলাকাজুড়ে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলবেন।

টপিকঃ #Lockdown #MigrantWorkers