অর্ক চৌধুরি

Jun 22, 2021

ব্ল্যাকমেলকে হাতিয়ার করে আসিফ

আপাতদৃষ্টিতে সাদামাটা ছেলেটা যে ঠাণ্ডা মাথার খুনি, তা একপ্রকার নিশ্চিত পুলিশ। বাবা, মা, ছোট্ট বোন, এমনকি বৃদ্ধা ঠাকুমাকে নৃশংসভাবে খুন করতে এতটুকু হাত কাঁপেনি আসিফের। বৈষ্ণবনগর কাণ্ডের তদন্তে এমনটাই মনে করছে সিআইডি। কারণ জেরার সময় বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত দেখায়নি আসিফকে।

আসিফকে জেরা করে একটি মেয়ের নাম সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, সিআইডি জানতে পেরেছে, খুনের পিছনে এই মেয়েটি একটা গুরুত্বপূর্ণ ক্লু। আসিফের বোনের এক বান্ধবী প্রায়শই তাদের বাড়িতে আসত। সেই মেয়েটির সঙ্গে আসিফের দাদার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।

আসিফ বিষয়টি জানতে পেরে যায়। তারপর থেকেই সে ফন্দি আঁটতে থাকে। এক সময় গোপনে দাদার সঙ্গে বোনের বান্ধবীর অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে নেয় আসিফ। সেই ভিডিয়ো দেখিয়ে দাদা আরিফ ও পরিবারের অন্য লোকদের ব্ল্যাকমেল করতে থাকে। এই ব্ল্যাকমেলই হাতিয়ার হয়ে ওঠে আসিফের। সিআইডির হাতে একটি সেক্স টেপও এসেছে। আসিফের কাছেই সেটি ছিল। এই সূত্র ধরে তদন্তে গতি আনতে চাইছেন সিআইডি আধিকারিকরা।

[ আগের খবরঃ গুলি করে খুনের ছক বদলে ফেলে আসিফ ]

এদিকে আসিফের এর বন্ধুর বাড়ি থেকে প্রচুর প্লাইউড ও মার্বেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্লাইউডগুলো কফিনের মতো প্রকোষ্ঠ তৈরিতে ব্যবহার করেছিল আসিফ। সেই প্রকোষ্ঠগুলোয় পরিবারের সদস্যদের হাত, পা বেঁধে ফেলে দেয় আসিফ। তারপর প্রকোষ্ঠগুলোয় জল ভরতি করে দেয়, যাতে পরিবারের সদস্যরা জলের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে মারা যান। তার আগে অবশ্য কোল্ড ড্রিংকের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাড়ির সকলকে অচৈতন্য করে দিয়েছিল সে।

জলের দমবন্ধ হয়ে মৃত্যুর পর বাবা, মা, বোন ও ঠাকুমার দেহ নবনির্মিত গোডাউনে নিয়ে যায় আসিফ। তারপর দেহগুলো পুঁতে দেয়। তবে বাড়ি থেকে গোডাউনে দেহগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল আসিফ। তদন্ত যত এগোবে, তত নতুন নতুন তথ্য সামনে আসবে বলে মনে করছে পুলিশ।

আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন