নিজস্ব প্রতিবেদন
Sep 10, 2020
Updated: Jan 12, 2021
মহানন্দটোলার বেশ কিছু জনপদ ইতিমধ্যেই তাদের অস্তিত্ব হারিয়েছে। জাফরহাজিটোলা বা জঞ্জালিটোলা গ্রামগুলির চিহ্ন এখন কার্যত খুঁজে পাওয়াই যাবে না। বছরের পর বছর ক্রমশ এগিয়ে এসেছে গঙ্গা। জমি-বাড়ি কেটে গিলে নিয়েছে। প্রতি বছর একই দুর্দশার চিত্র এখানে ঘুরেফিরে আসে। ইদ চলে গিয়েছে, সামনেই পুজো। কিন্তু বিষাদের কালো ঘন ছায়া সব সময়েই ঢেকে রাখে গঙ্গা ও ফুলহর পাড়ের হাজার হাজার পরিবারকে।
দু'বছর আগেও যেখানে জঞ্জালিটোলার অস্তিত্ব দেখা যেত, আজ সেখানে উথালপাতাল গঙ্গা আরও আগ্রাসী রূপ নিয়ে বয়ে চলেছে। দূরে রাজমহল পাহাড়ের গায়ে গঙ্গার জল আছাড় খেয়ে আবার এদিকেই ধেয়ে আসে। আর গিলে নেয় মোস্তাফা-রাজুদের সব স্বপ্ন। সর্বস্ব হারিয়ে আজ তারা প্রকৃত অর্থেই সর্বহারা।
এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ড. সুপ্রতিম কর্মকার। তাঁর বক্তব্য, কোশি নদীর জল হুহু করে ফুলহরে ঢুকছে। ফলে একটা সময় যে ফুলহর প্রায় মরে গিয়েছিল, সেই নদীই আজ ফুলেফেঁপে বিধ্বংসী আকার নিয়েছে। তার ওপর ফুলহর যদি গঙ্গার সাথে মিশে যায়, তাহলে তো আর কিছু বাঁচানো যাবে না। এই এলাকায় ভাঙন আটকানো খুবই কঠিন। বৈষ্ণবনগরের যে সব এলাকায় ভাঙন হচ্ছে বা গঙ্গার ওপারে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা-সামশেরগঞ্জে যে সব অঞ্চলে মাটি কাটছে, সেখানকার পরিস্থিতিটা রতুয়ার থেকে আলাদা। সেই এলাকায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে বাঁধ দিলে ভাঙন কিছুটা হলেও রোখা যাবে। কিন্তু মহানন্দটোলার মতো এলাকাগুলো বাঁধ দিয়ে টিকিয়ে রাখা যাবে না। পুরো এলাকাটাই গঙ্গা-ফুলহরের মাঝে এখন দ্বীপ হয়ে আছে।
এবার ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়েছে মালদার বৈষ্ণবনগরেও। উলটো দিকের ফরাক্কাতেও গঙ্গাগর্ভে প্রায় প্রতিদিনই ভিটেমাটি, আবাদি জমি-সব কিছুই চোখের সামনে তলিয়ে যাচ্ছে। বছর ঘোরে, ভোট আসে ভোট যায়, কিন্তু ভাঙনদুর্গতদের দুর্দশা আর ঘোচে না।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন