আমাদের মালদা ডিজিট্যাল

Jun 30, 2020

করোনায় মালদায় দ্বিতীয় মৃত্যু, বলি ২৮ বছরের যুবক

Updated: Aug 7, 2020

মালদায় মোট সংক্রমণ সবেমাত্র ছয়শো পার করেছে। আতঙ্কের স্রোত বইছে এই জেলায়। প্রশাসন ও বাণিজ্য মহলের যৌথ সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আংশিক লকডাউন শুরু হয়েছে শহরে। এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দ্বিতীয়জনের। মালদা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভরতি হয়েছিলেন এই যুবক। মৃত্যুর আগেই হাসপাতালে এই ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আজ সেই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। গত ২৮ জুন রাত দুটো নাগাদ মৃত্যু হয় যুবকের। এরপর প্লাস্টিক শিটে মুড়ে মৃতদেহ গ্রামে কবরস্থ করা হয়। উল্লেখ্য, প্রথম মৃত্যুটি কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এক ব্যবসায়ীর।

কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা ছিলেন ২৮ বছরের যুবক মইন আশরাফ। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন উচ্চশিক্ষিত ছিলেন মইন। চাকরি না পেয়ে একটি ঘড়ির দোকানে কাজ শুরু করেছিলেন। হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল অনেকদিন ধরে। শ্বাসকষ্টের জন্য আগে চিকিৎসাও করিয়েছেন। নিউমোনিয়া হওয়ায় তিনদিন আগে মালদা মেডিকেল কলেজে ভরতি করা হয়। সেখানেই ২৮ তারিখ রাত দুটোর সময় মারা যান।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, করোনার উপসর্গ দেখতে পেয়ে যুবককে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভরতি করা হয়েছিল। গত ২৭ তারিখ যুবকের লালারস মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগে পাঠানো হয়। এরপর ২৮ তারিখ রাত দুটোর সময় যুবকের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর যুবকের করোনা সংক্রমণ জানা যায়। এদিকে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের দিকে আঙুল তুলেছে বিভিন্ন মহল। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে মৃতদেহ কবরস্থ করা হয়েছে। এই খবরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্বাস্থ্য দফতরে। তবে কবরস্থ করার সময় কতজন মৃতদেহের সংস্পর্শে এসেছেন তা জানা যায় নি। এই বিষয়ে মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ অমিত দাঁ কোনও মন্তব্য জানান নি।

কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক কৌশিক মিস্ত্রি জানালেন, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ যুবকের মৃতদেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিতে নিমরাজি ছিলেন৷ কিন্তু মৃতদেহ নেওয়ার জন্য রীতিমতো অশান্তি শুরু করে যুবকের পরিবারের লোকজন৷ শেষমেশ বাধ্য হয়ে মেডিকেল কলেজ মৃতদেহ প্লাস্টিকে মুড়ে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয়৷ এক্ষেত্রে সমস্ত নিয়ম সঠিকভাবে মানা হয়েছে। পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারিতে মৃতদেহ গ্রাম কবরস্থ করা হয়েছে৷ তবে দেহ নিয়ে গ্রামে ঢোকার সময় মৃতের পরিবারকে বাধা দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের তরফে৷ ওই মৃতদেহের সংস্পর্শে যারা এসেছিল, তা খুঁজে বের করে প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে৷

জেলার প্রথম করোনা সংক্রামিতের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গত ২৭ জুন বিকেলে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। তিনি হৃদরোগের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন৷ ৫৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির বাড়ি কালিয়াচক-২ নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের আমলিতলা গ্রামে৷ তিনি একজন বড়ো ব্যবসায়ী৷ তবে কলকাতার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেয়নি৷ সরকারি নিয়ম মেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই ওই করোনা সংক্রামিত মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে৷
 

 
টপিকঃ #CoronaVirus