অসময়ের শিলাবৃষ্টির ফলে মাথায় হাত পড়েছে পুরাতন মালদার আলু চাষিদের। গতকালের শিলাবৃষ্টিতে কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি কৃষকদের। পরিস্থিতি যে জটিল, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছে জেলা কৃষি দফতর৷গোটা ঘটনা নিয়ে কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে রাজ্যে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে৷
গতকাল বিকেল থেকে জেলা জুড়ে শুরু হয় বৃষ্টি৷ চলে মাঝরাত পর্যন্ত৷ কোথাও কোথাও বৃষ্টির সঙ্গে পড়তে থাকে শিল৷ আজ সকালে চাষের জমি দেখে মাথায় হাত পড়ে পুরাতন মালদার মহিষবাথানি এলাকার আলুচাষিদের৷ ওই এলাকায় প্রায় ৩,১০০ হেক্টর জমিতে এবার আলু চাষ হয়েছে৷ এলাকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকরা মূলত এই চাষের উপরেই নির্ভর করে থাকেন৷ কেউ ব্যাংক, কেউ বা মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন৷ আজ সকালে তাঁরা দেখেন, সমস্ত আলুর জমিতে জমে রয়েছে বৃষ্টির জল৷ সেই জল নিকাশের কোনও ব্যবস্থা নেই৷ সেভাবে রোদ না ওঠায় জল তাড়াতাড়ি শুকবেও না৷ ফলে ফাল্গুনের বৃষ্টিতে তাঁদের কপাল যে পুড়ল, তা নিয়ে নিশ্চিত সবাই৷
কৃষকদের দাবি, গতকালের বৃষ্টিতে মহিষবাথানি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার প্রায় সব আলুর খেত জলের তলায় চলে গিয়েছে৷ ওই জমি থেকে আর আলু ওঠানো সম্ভব নয়৷ মাটির নীচে থাকা আলুতে পচন ধরতে শুরু করেছে৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবে ঋণ শোধ করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না৷ তাঁরা সরকারের কাছে প্রতি বিঘা জমির জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩০ হাজার টাকা দাবি করছেন৷ ক্ষতিপূরণ না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া তাঁদের কোনও উপায় থাকবে না৷
এলাকা পরিদর্শন করে ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা সাইফুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, আজ মহিষবাথানি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার আলুর জমি পরিদর্শন করলাম৷ গতকালের বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে এলাকার প্রায় সব জমির আলুই নষ্ট হওয়ার মুখে৷ দু’একদিনের মধ্যে জমিতে জমে থাকা জল বেরিয়ে যেতে না পারলে সব আলু নষ্ট হয়ে যাবে৷ কিন্তু যা দেখছি, তাতে ওই জলনিকাশের কোনও সম্ভাবনা নেই৷ আমরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি বিমা কোম্পানিকে জানিয়েছি৷ জানানো হয়েছে জেলা কৃষি দফতরকেও৷ আজই আমরা এনিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করছি৷ সেই রিপোর্ট কৃষি দফতর ও বিমা কোম্পানিকে পাঠানো হবে যাতে চাষিরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পান৷
Comments