top of page

দেড় কোটি টাকার বিলের অস্তিত্ব নেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে

কিছুদিন আগে বিজেপি সহ বেশ কিছু রাজনৈতিক সংগঠন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রুশার পাঠানো কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তোলে৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য শিক্ষাদপ্তরকে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে তার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় রুশা৷ রাজ্য শিক্ষা দপ্তর থেকে কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় জেলাশাসককে৷ ওই নির্দেশ পেয়েই অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর ভিমলাকে চেয়ারম্যান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলাশাসক৷ শুরু হয় তদন্ত৷ সেই তদন্ত চালাতে গিয়েই কপালে হাত পড়েছে কমিটির৷


দেড় কোটি টাকার বিলের অস্তিত্ব নেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে

রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের (রুশা) নির্দেশে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করতে নেমে মাথায় হাত পড়েছে তদন্ত কমিটির৷ প্রায় দেড় কোটি টাকার উধাও হয়ে যাওয়া বিলের কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না৷ ফলে তদন্তের কাজেও সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ যদিও খুব তাড়াতাড়ি একটি ইন্টেরিম রিপোর্ট রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে পাঠাতে চলেছে তদন্ত কমিটি৷


সূত্রের খবর, রুশার পাঠানো প্রায় ৯ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়৷ হিসেবপত্র খতিয়ে দেখতে গিয়ে কমিটির নজরে আসে, প্রায় দেড় কোটি টাকার বিলের কোনও অস্তিত্বই নেই৷ অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চেক রেজিস্টার, অ্যাকাউন্ট ও ব্যাংক স্টেটমেন্টে সেই খরচের উল্লেখ রয়েছে৷ জানা গিয়েছে, এই পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয়েছে তিনটি সংস্থাকে৷ সংস্থাগুলি হল বিজি কনস্ট্রাকশন, অর্কদীপ এন্টারপ্রাইজ ও মা কৃষ্ণকালী ক্যাবিনেট৷ এর বাইরেও ওই তিনটি সংস্থাকে আরও বিল মেটানো হয়েছে৷ তবে সেই বিলগুলি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে৷ জানা গিয়েছে, এই তিনটি সংস্থা মূলত ইন্টেরিয়ার ডেকোরেশনের কাজ করে সেই বিপুল অংকের বিল পেয়েছে৷ সেই কাজগুলির মধ্যে রয়েছে ইনস্পেকটর অফ কলেজেস, ফিনান্স অফিসার, ডেভেলপমেন্ট অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারের ব্যক্তিগত চেম্বারের আমূল সংস্কার৷ প্রতিটি ঘরই যে কোনও পাঁচতারা হোটেলের ঘরকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে৷ কিন্তু সেই ঘরগুলি নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই এমন বিপুল অর্থে সংস্কার করা হল কেন? উত্তর পাওয়া যায়নি৷ তবে সেই কাজ হয়েছে ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরেই৷ যে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক গোপালচন্দ্র মিশ্র৷

আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে উঠে এসেছে আরও বিস্ময়কর তথ্য৷ দেখা যাচ্ছে, ওই সময়কালে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকশো বাতানুকূল যন্ত্র কেনা হয়েছে৷ প্রতিটিই বিভিন্ন নামিদামি সংস্থার৷ কিন্তু প্রতিটি যন্ত্র বাজারদর থেকে ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দামে কেনা হয়েছে৷ সবচেয়ে বড়ো বিষয়, কেউ দোকান থেকে বাতানুকূল যন্ত্র কিনলে দোকান কর্তৃপক্ষ নিজেরাই বিনামূল্যে সেই যন্ত্র ঘরে লাগিয়ে যায়৷ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি এসি মেশিনের ইন্সটলেশন চার্জ ধরা হয়েছে ৬ হাজার টাকা৷ যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে তদন্ত কমিটির৷

ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দুটি বৈঠক করেছে তদন্ত কমিটি৷ কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বেশ কিছু নথি চেয়েছেন৷ বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সব নথি তদন্ত কমিটির সামনে পেশ করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ এনিয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারি আরেকটি বৈঠক ডাকা হয়েছে৷ গোটা ঘটনা সম্পর্কে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আর ভিমলার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি তদন্ত সম্পর্কে কিছু জানাতে রাজি হননি৷ তিনি শুধু বলেন, প্রচুর নথিপত্র খতিয়ে দেখা সময়সাপেক্ষ বিষয়৷ তবে খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা একটি ইন্টেরিম রিপোর্ট রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দপ্তরে পাঠাতে চলেছেন৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page