বাস্তুভিটে নিয়ে বিবাদ, কাকাকে খুন করল ভাইপো

চাঁচল থানার এলাঙ্গি গ্রামে মাত্র সাত কাঠা বাস্তুভিটে নিয়ে বিবাদের জেরে কাকাকে খুন করল ভাইপো৷ এদিন সকাল ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। আগ্নেয়াস্ত্র সহ অভিযুক্ত ভাইপোকে ধরে ফেলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ৷ এই ঘটনায় শুক্রবার তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর মালদায়৷
মৃতের নাম রেজাউল হক (৫৫)৷ পেশায় কৃষিজীবী তিনি৷ বেশ কয়েক বিঘা জমিতে চাষ করে সংসার চালান তিনি৷ বয়সের কারণে বর্তমানে সেই জমি চাষের দায়িত্ব নিয়েছেন তাঁর ছেলেরা৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস্তুভিটের কাঠা সাতেক জায়গা নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে রেজাউল সাহেবের বিবাদ চলছিল তাঁর দাদা জেরাত আলির সঙ্গে৷ দিন কুড়ি আগে গ্রামবাসীরা দুই পক্ষকে একসঙ্গে বসিয়ে বিবাদের মীমাংসাও করে দেয়৷ কিন্তু গ্রামের মাতব্বরদের সেই মীমাংসা মানতে চাননি জেরাত আলি কিংবা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য৷
রেজাউল সাহেবের এক ছেলে আজমল হোসেন জানান, এদিন সকালে তাঁর এক ভাই জমিতে চাষ করতে গিয়েছিল৷ সেই ভাইকে খাবার দিতে যান তাঁর বাবা৷ ফেরার সময় তাঁর জ্যেঠুর ছেলে আবদুল করিম তাঁর বাবাকে লক্ষ্য করে প্রথমে বোমা ছোঁড়ে৷ কিন্তু সেই বোমাটি ফাটেনি৷ এরপর সে তাঁর বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়৷ গুলি লাগে তাঁর বাবার বুকে৷ রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন তিনি৷ শেষে মৃত্যু নিশ্চিত করতে আবদুল ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর বাবাকে কোপায়৷ সেই দৃশ্য দেখে গ্রামবাসীরা ছুটে এলে সে সেখান থেকে পালিয়ে যায়৷ গ্রামবাসীরাই বোমাটিকে জলে ফেলে নিষ্ক্রিয় করেন৷ খবর দেওয়া হয় চাঁচল থানায়৷
এদিকে সকাল ৯টা নাগাদ এই ঘটনার কথা মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে চাউর হয়ে যায়৷ এদিন এলাঙ্গি সংলগ্ন ভালুকা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালাচ্ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ৷ সেই পুলিশকর্মীদেরই নজরে পড়ে, ভালুকা বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছে আবদুল৷ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেখান থেকে ধরে ফেলে৷ তার হেপাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয় রেজাউল সাহেবকে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও৷ পরে তাকে চাঁচল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷
চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে, কাকাকে খুনের দায়ে আবদুল করিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ রেজাউল হকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷