বইমেলা বইমেলাতেই
top of page

বইমেলা বইমেলাতেই

দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর জেলাশাসক জানিয়েছেন, মালদা জেলা বইমেলা হবে মালদা কলেজ মাঠেই৷


বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের অঙ্গ এখন বইমেলাও৷ আর সে বইমেলা যদি মালদায় হয়, তাহলে তো কথাই নেই৷ নতুন মলাটের গন্ধ মাখা হাজারো বইয়ের সম্ভার, চোখ ধাঁধানো প্রদর্শনী, হরেক বিষয়ের ওপর গুরুগম্ভীর আলোচনায় মঞ্চ কাঁপানো বক্তব্য, কবিদের আড্ডা, বন্ধুদের গপ্পো করার একটা মুক্তাঙ্গন হয়ে উঠেছে মালদা জেলা বইমেলা৷ বইয়ের বেচাকেনাটাও নেহাত কম হয় না এখানে৷ বাড়তি পাওনা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নানা আঙ্গিক, কচিকাঁচাদের বসে আঁকোর আসর৷ আর জেলার লেখকদের বই প্রকাশের মঞ্চও যে মালদার প্রাণের এই বইমেলা৷ কিন্তু কখন যেন এই বইমেলায় গ্রহণ লেগেছে৷ কলেজ মাঠ না মহানন্দার বুকে গজিয়ে ওঠা এবড়োখেবড়ো চর, নাকি শহর থেকে সরে কালিয়াচকে কোথায় হবে জেলা বইমেলা?


উত্তরের খোঁজে দড়ি টানাটানি চলছে বিস্তর৷ খোদ বিভাগীয় মন্ত্রীর প্রশ্ন সরকারি নিয়ম যখন বলছে, জেলা বইমেলা জেলার বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে ঘুরে হবে, তখন শুধু মালদা শহরেই কেন বছরের পর বছর বইমেলা আটকে থাকবে? সত্যিই তো! সব জেলাতেই তো বইমেলা ঘূর্ণি হয়ে ঘোরে৷ তাহলে এখানে ব্যতিক্রম হবে কেন?



মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির ইচ্ছে, জেলা বইমেলা এবার হোক কালিয়াচকে৷ সেজন্য জায়গা দেখার কাজও শেষ হয়েছে৷ এখবর জানা মাত্রই জেলার তাবড় তাবড় বুদ্ধিজীবীরা প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন৷ আবার ভিন্ন মত পোষণ করে কালিয়াচকে বইমেলার পক্ষে সওয়ালও করেছেন অনেকে৷ বঙ্গরত্ন শিক্ষাবিদ শক্তিপদ পাত্র অকপটে বলেছেন আসল সত্যটা৷ তাঁর সোজাসাপটা কথা, বাস্তব পরিস্থিতিটা দেখতে হবে৷ মালদা শহর থেকে বইমেলা সরানো উচিত নয় কখনও৷ একই মত অধ্যাপক স্বপনকুমার মণ্ডলেরও৷ তবে কালিয়াচকে বইমেলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন কালিয়াচক কলেজের অধ্যক্ষ নাজিবর রহমান৷


শক্তিপদ পাত্র, শিক্ষাবিদ

বাস্তব পরিস্থিতিটা দেখতে হবে৷ মালদা শহর থেকে বইমেলা সরানো উচিত নয় কখনও৷

এতসবের পর তবে বইমেলাটা হবে কোথায়? দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর জেলাশাসক জানিয়েছেন, মালদা জেলা বইমেলা হবে মালদা কলেজ মাঠেই৷ মানে, বইমেলা আছে বইমেলাতেই৷ এর আগে অবশ্য মালদা কলেজ কর্তৃপক্ষ বইমেলার জন্য মাঠ দিতে অঙ্গীকার করেছিল৷ কলেজের বক্তব্য ছিল, বইমেলা হয়ে যাওয়ার পর আর কেউ মাঠকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে না৷ মাঠ জুড়ে পেরেক ছড়িয়ে থাকে৷ টাকাপয়সা খরচ করে কলেজকে মাঠ পরিষ্কার করাতে হয়৷


বইমেলার পর মাঠকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা বইমেলা কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে৷ আর এই দায়িত্ব পালনে সাফল্য এলে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও ভবিষ্যতে মাঠ দিতে কোনো অসুবিধা হবে না৷


বইমেলাপ্রেমীদের বক্তব্য, মালদা জেলা বইমেলার খ্যাতি মালদার গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা রাজ্যে পৌঁছে গেছে৷ বইমেলা শুধু একটা সরকারি অনুষ্ঠান নয়, এটা জেলার মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে৷ এক্ষেত্রে শহরের প্রাণকেন্দ্র মালদা কলেজ মাঠেই বইমেলা হলে সকলের সুবিধা৷


এবার মালদায় সরকারি উদ্যোগে জোড়া বইমেলা হতে চলেছে৷ প্রথমটি হবে কলেজ মাঠে৷ দ্বিতীয়টি কালিয়াচকে৷


মোদ্দাকথা, এবার মালদায় সরকারি উদ্যোগে জোড়া বইমেলা হতে চলেছে৷ প্রথমটি হবে কলেজ মাঠে৷ দ্বিতীয়টি কালিয়াচকে৷ এতে মন্ত্রীর ইচ্ছেও রইল, জেলার সিংহভাগ বুদ্ধিজীবীর দাবিও মানা হল৷ কলকাতার পরেই কলেবরে মালদা জেলা বইমেলার নাম আসে৷ কলকাতা থেকে নামীদামী প্রকাশনা সংস্থা তো থাকেই, জায়গা পায় জেলার প্রকাশনা সংস্থাগুলিও৷ এবারও বইমেলা আদপে সকলের মিলনমেলার রূপ নেবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ৷ তবে বইমেলায় ঢুকতে গেলে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে এবারও৷ কারণ মেলায় প্রবেশের জন্য টিকিট থাকছে, প্রতিবেশী জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরে না থাকলেও৷


#MaldaBookFair ছবি সৌজন্যে পিক্সঅ্যাবে

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page