পদ্মশ্রী কমলি সোরেন, জেলার মুকুটে নতুন পালক
top of page

পদ্মশ্রী কমলি সোরেন, জেলার মুকুটে নতুন পালক

পদ্মশ্রী পেল মালদা৷ গাজোলের প্রত্যন্ত কোটালহাটি গ্রামের আদিবাসী প্রৌঢ়া কমলি সোরেনের হাত ধরে মালদা জেলার মুকুটে জুড়ল এই পালক৷ সমাজসেবামূলক কাজের স্বীকৃতি হিসাবে গতকাল, প্রজাতন্ত্র দিবসে জাতীয় পদ্মশ্রী সম্মাননায় তাঁকে ভূষিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এনিয়ে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে গাজোল থেকে শুরু করে গোটা জেলায়৷



কমলিদেবীর বাপের বাড়ি পুরাতন মালদার বাগমারা সংলগ্ন পিপড়া গ্রামে৷ ছোটোতেই বিয়ে হয়েছিল এলাকার এক যুবকের সঙ্গে৷ তাঁদের একটি মেয়েও রয়েছে৷ বিয়ের কয়েক বছর পরেই মৃত্যু হয় স্বামীর৷ এরপরেই সনাতনী ধর্মকে আঁকড়ে ধরে ঘর ছাড়েন তিনি৷ চলে আসেন গাজোলের কোটালহাটি গ্রামের রাজেন সন্ন্যাসীর আশ্রমে৷ তখন থেকে সেটাই তাঁর ঠিকানা৷ পরে মা দুলি হেমব্রমকেও সেখানে নিয়ে আসেন তিনি৷ ওই আশ্রমে থেকে প্রাচীন ভারতীয় ধর্ম সংরক্ষণের জন্য চেষ্টা শুরু করেন তিনি৷ যেসব আদিবাসী ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে, ধর্মান্তরণের মাধ্যমে তাদের তিনি ফের আদিবাসী সনাতনী ধর্মে ফিরিয়ে আনেন৷ একইভাবে যেসব আদিবাসী বৈবাহিক সূত্রে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছে, তাদেরও তিনি ফের নিজেদের পুরোনো ধর্মে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেন৷ এভাবেই কেটে গিয়েছে ২৫ বছরেরও বেশি সময়৷ তবে শুধু ধর্মান্তরণই নয়, এই সময়ের মধ্যে তিনি আদিবাসীদের জড়িবুটির চিকিৎসাও করেছেন৷ এখনও করেন৷


এভাবেই চলছে তাঁর ‘সমাজসেবা’৷ তিনি জানাচ্ছেন, “যতদিন বাঁচব, ততদিন এভাবেই অন্য ধর্মে চলে যাওয়া আদিবাসীদের ধর্মান্তরণ করে সনাতনী ধর্মে ফিরিয়ে আনব৷ এভাবেই তাদের চিকিৎসা করব৷ শুধু মালদা নয়, ২৫ বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আমি এই কাজ করে যাচ্ছি৷ গত পরশু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আমাকে ফোন করে জানানো হয়, পদ্মশ্রী প্রাপকের তালিকায় আমার নাম ১০৯ নম্বরে রয়েছে৷ এই সম্মাননা পেয়ে আমি খুশি৷”



জানা যাচ্ছে, আদিবাসীদের ‘বনবাসী কল্যাণ সমিতি’ কমলিদেবীর নাম পদ্মশ্রীর সম্মাননার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠায়৷ সেই নামে সিলমোহর দেয় কেন্দ্র৷ এনিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে৷ যে সম্মাননা প্রাপকের তালিকায় নারায়ণ দেবনাথ, সুজিত চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিদগ্ধদের নাম রয়েছে, সেই তালিকায় শুধুমাত্র ধর্মান্তরণ এবং জড়িবুটির চিকিৎসা করেও নাম তোলা যায়? এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে অনেকে৷


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page