মাঝেরহাটের পর বাগরি আতঙ্কে জেলার ব্যবসায়ীরা
তিনদিন পার হয়ে গেলেও এদিনও জ্বলছে ক্যানিং স্ট্রিটের বাগরি মার্কেট। আজও কলকাতার বাগরি মার্কেটের বিভিন্ন ঘর থেকে আগুনের ফুলকি দেখা গিয়েছে। ধোঁয়া দেখা গিয়েছে ডি ব্লকের বিভিন্ন অংশেও। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, চার ও পাঁচতলার বিভিন্ন ঘরে এখনও আগুন জ্বলছে। শুধু তাই নয়, প্রবল তাপে লোহা বিম গলে গিয়ে বাগরি মার্কেটের একাংশ ভেঙে পড়তেও পারে বলে মনে করছে ব্যবসায়ীরা। দমকলের ৩৫টি ইঞ্জিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে দফায় দফায় লালদিঘি থেকে জল এনে ঢালা হয়েছে বাগরি মার্কেটে। এদিকে সকালে আবার মার্কেটের বাইরের দেওয়ালে একটি বড় ফাটল দেখতে পান দমকলকর্মী। একতলায় দেওয়ালের চাঙর খসে পড়েছে। বাগরি মার্কেটে বিল্ডিটির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশেষ দল তৈরি করেছে কলকাতা পুলিশ।
চিত্তরঞ্জন মার্কেটে বিপজ্জনক অবস্থায় বৈদ্যুতিক সংযোগ
এ তো গেল কলকাতার কথা। মালদা শহরের বাজারগুলিতেও অগ্নিনির্বাপণের ঘাটতি রয়েছে। যে-কোনো বাজারে গেলেই দেখা যাবে ঘিঞ্জি দোকানের সারি। ভিতরের রাস্তা অপরিসর। কখনও আগুন লাগলে হুড়োহুড়িতে ঘটে যেতে পারে অঘটন। দেয়ালগুলিতে খোলা বিদ্যুতের তার। যে কোনো মুহূর্তে শর্টসার্কিটের সম্ভাবনা। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা কোনো বাজারেই নেই। দোকানি কিংবা ক্রেতা, প্রশ্ন করলেই জানা যাবে, কবে সেই বাজারে অগ্নিনির্বাপণ দপ্তর কিংবা প্রশাসনের নজরদারি চলেছে, তা কেউ জানেন না। ঠেকায় পড়ে কখনও কখনও পুরসভার পক্ষ থেকে নজরদারি হয়েছে বটে, তবে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। শহরের প্রবীণদের মুখে শোনা যায়, একসময় মালদা শহরের ভিতর একাধিক পুষ্করিণী ছিল। টলটল করত জল। সাধারণভাবে গভীরতা মাপা যেত না। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সেসবের বেশিরভাগই বিলুপ্ত হয়েছে। এখন সেখানে ফ্ল্যাটবাড়ি অথবা প্লট করে বিক্রি হওয়া জায়গায় গড়ে উঠেছে সুরম্য ভবন। সেই ধারা এখনও প্রবহমান। শহরের একদিকে চাতরার বিল। প্রতিদিন একটু একটু করে ভরাট করছে জমি হাঙররা। রাজনীতির কারবারিরাই সেসব কাজ করাচ্ছে বলে অভিযোগ। আরেকদিকে মহানন্দা নদী। গ্রীষ্মে অবশ্য তাকে নদী না বলে নর্দমা বলাই ভালো। গ্রীষ্মে নদীতে জল থাকে না বললেই চলে। ফলে বড়ো ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটলে সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষতি দেখা ছাড়া শহরবাসীর কোনো উপায় থাকবে না।
অতুল মার্কেটের সামনেও মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে রয়েছে বৈদ্যুতিক তার
ছবিঃ মিসবাহুল হক