প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মাধ্যমিকে সফল যমজ ভাই
একজনের স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ার, অন্যজনের ডাক্তার। বাবা পাম্প অপারেটর ও মা গৃহবধূ। বর্তমানে রামনগর কাছারি সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ঠিকানা এদের। আর্থিক দুর্দশা ও বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বড়োসড়ো সাফল্য লাভ করল দুই যমজ ভাই।
মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে জন্ম দুই ভাইয়ের, সুমন্ত চক্রবর্তী ও সায়ন চক্রবর্তী। দুজনেই এবছর রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির থেকে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে। সুমন্তর প্রাপ্ত নম্বর ৬১৪ ও সায়নের প্রাপ্ত নম্বর ৬৪২। বাবা সমীরণ চক্রবর্তী ও মা সবিতা চক্রবর্তী জানালেন যে ছোটবেলা থেকেই দুই ভাই পড়াশুনায় ভাল। একদিকে যেমন আর্থিক সংকট তেমনি পরীক্ষার ঠিক কিছুদিন আগেই জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তাঁদের বসবাসের বাড়িটুকুও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় তারা নিজ গৃহহীন হয়ে অন্য বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন। নিজেদের পরিশ্রম ও জেদের জোরেই পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছে সুমন্ত-সায়ন। আর্থিক সংকটের জন্য তাঁরা তাঁদের দুই ছেলের ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার খরচ বহন করতে অক্ষম, তাই চোখে জল নিয়ে বাবা মা-এর আবেদন যদি কোনো সহৃদয় ব্যক্তি দুই ছেলের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে সহায়তা করেন তাহলে হয়তো তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বামী সুরাত্মানন্দ মহারাজ জানালেন সুমন্ত ও সায়ন পড়াশুনায় মধ্যম প্রকৃতির ছাত্র ছিল। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষায় তারা ভাল ফল করেছে। যদিও তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের আর্থিক সংকটের কথা বিদ্যালয়ে জানানো হয়নি, কিন্তু আর্থিক অভাবের দরুন কোনো মেধাবী ছাত্রের উচ্চশিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে তা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হতে দেবেন না। বিদ্যালয়ের তরফ থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে তাদের সবরকম সহায়তা করা হবে বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
ভিডিয়োঃ কৃতাঙ্ক।
টপিকঃ #মাধ্যমিক