জোড়া অপহরণের অভিযোগ মালদা শহরে
জোড়া অপহরণের অভিযোগ উঠল শহরে। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজে কলকাতা থেকে মালদায় আসা দুই বধূর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় এদিন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন এক অপহৃতের স্ত্রী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
কলকাতার যাদবপুরের বাসিন্দা প্রিয়া সরদার (দে)। তিনি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করেন। তাঁর স্বামীর নাম প্রভাকর দে। কয়েক বছর ধরেই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য যথেষ্ট পরিচিতিও রয়েছে প্রিয়ার।
প্রিয়া জানান, কয়েকদিন আগে মালদার এক ব্যক্তি পর পর কয়েকদিন তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে। ওই ব্যক্তি তাঁকে জানায়, মালদায় একটি বড়ো ইভেন্ট রয়েছে। তার হাতে ১২ জন মেয়ে রয়েছে। কিন্তু তার ১৪ জন মেয়ে প্রয়োজন। এই কাজের জন্য তাঁকে মোটা টাকা অফারও করা হয়। তিনি ওই ব্যক্তিকে জানান, তাঁর এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি মালদা আসছেন। স্বামীকে নিয়ে ২৫ মে ভোরে তাঁরা মালদা পৌঁছোন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু শেফালি বাড়ুই ও তাঁর স্বামী সুরজকুমার মারিয়া। ওই ব্যক্তি তাঁদের রিসিভ করে একটি হোটেলে নিয়ে যায়। সকালে ওই ব্যক্তি তাঁদের অগ্রিম দেবে বলে তাঁর স্বামী ও সুরজকে ব্যাংকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে দুজনের আর কোনও খোঁজ মেলেনি।
প্রিয়া আরো বলেন, বিকেলে অপরিচিত একটি ফোন নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর স্বামী জানান, তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। তিনি যেন সব পুলিশকে জানান। একথা শুনে তিনি ঘাবড়ে যান। বাড়িতে ফোন করে সব ঘটনা জানান। খবর পেয়েই তাঁর মা ট্রেনে মালদার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। রাতে তিনি মায়ের জন্য স্টেশনেই বসে ছিলেন। তখনই ওই ব্যক্তি ফোন করে তাঁকে জানায়, ১৫ লক্ষ টাকা দিলে তারা তাঁর স্বামী ও সুরজকে ছেড়ে দেবে। কিন্তু ২৬ তারিখ সকাল ১০টার মধ্যে টাকা না দিলে সে তাঁর স্বামীকে খুন করার হুমকি দেয়। প্রথমে সে তাঁর স্বামীর অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলতে বলে। পরে বলে, টাকা হাতে হাতে দিতে হবে। কোথায় টাকা দিতে হবে পরে সে জানিয়ে দেবে। যদিও রবিবার বিকেল পর্যন্ত ওই ব্যক্তি আর তাঁকে ফোন করেনি। এদিকে তাঁর কাছে কোনও টাকাপয়সা না থাকায় তিনি কিছু করতে পারছিলেন না। অবশেষে একটি সহৃদয় ছেলে তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেন। তাঁকে থানায় নিয়ে যান। এই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার তাঁকে আইসির কাছে নিয়ে যান। আইসি তাঁকে গোটা ঘটনা লিখিতভাবে জানানোর পরামর্শ দেন। সেই সময় আরেক সমস্যায় পড়েন তিনি। ওই মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার একটি সাদা কাগজের জন্য তাঁর কাছে ৩০ টাকা দাবি করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি গোটা বিষয়টি লিখিতভাবে পুলিশে জানাতে পেরেছেন। স্বামীকে ফিরে পেতে এখন পুলিশই তাঁর একমাত্র ভরসা।
ছবিটি প্রতীকী।