বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রারকে নিগ্রহ কাণ্ডে দুই কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ
অবশেষে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরেই নিগ্রহ কাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে দুই অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হল। যদিও ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর না করে জেনারেল ডায়ারি দায়ের করায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এদিকে অভিযুক্ত দুই অস্থায়ী কর্মীকে সংগঠন থেকে বহিস্কার করেছে সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি। এদিন সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব চিঠি দিয়ে সেকথা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট সভাপতিকে জানিয়ে দিয়েছে। তবে এদিনও কাজে আসেননি নিগৃহীত সহকারী রেজিস্ট্রার। তাঁর মোবাইল ফোন সারাদিন বন্ধ ছিল।

উল্লেখ্য, গতকাল নিজের কক্ষেই দুই অস্থায়ী কর্মীর হাতে নিগৃহীত হন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার অচিন্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব নেওয়ার ৯৬ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর কক্ষে ঢুকে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনায় উপাচার্যের কাছে চন্দন মণ্ডল ও ইমদাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান অচিন্ত্যবাবু। গতকালই উপাচার্য জানিয়েছিলেন, এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি। তবে ঘটনার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় বিস্মিত হয় জেলার শিক্ষা মহল।
অবশেষে এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডেভেলপমেন্ট অফিসার রাজীব পুততুন্ডি চন্দনবাবু ও ইমদাদুলের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এত বড়ো ঘটনায় এফআইআর না করে শুধুমাত্র একটি জেনারেল ডায়ারি কেন করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র এদিন তিনি জানান, অচিন্ত্যবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন চন্দন মণ্ডল ও ইমদাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় জেনারেল ডায়ারি করা হয়েছে। ওই দুই অস্থায়ী কর্মীকে আপাতত কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির রিপোর্ট পেলেই ওই দুই কর্মীকে বহিস্কার করা হবে। কিন্তু এফআইআর না করে জেনারেল ডায়ারি কিংবা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট না পাওয়ার আগেই কেন বহিস্কারের প্রসঙ্গ, সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি উপাচার্য।
এদিকে আজ সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির রাজ্য সভাপতি ও রাজ্য সম্পাদকের নির্দেশে সংগঠনের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের শুধুমাত্র সভাপতি ছাড়া সমস্ত সদস্যকে বহিস্কার করা হয়েছে। ইউনিট সভাপতি মানস সরকারকে সাহায্যের জন্য কার্যকরী সভাপতি হিসেবে শুভায়ু দাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বহিস্কার করা হয়েছে সংগঠনের দুই সক্রিয় সদস্য চন্দন মণ্ডল ও ইমদাদুল ইসলামকেও। এদিন চিঠি মারফৎ সেই সিদ্ধান্তের কথা মানসবাবুকে জানিয়ে দিয়েছেন সংগঠনের জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ মণ্ডল ও সম্পাদক শুভঙ্কর ভট্টাচার্য। যদিও তাঁরা এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে রাজি হননি।