দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্তের চিকিৎসার দায়িত্ব নিল প্রশাসন

দুরারোগ্য ব্যধিতে ভুগতে থাকা দুই পড়ুয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে নিজেদের মানবিকতার পরিচয় দিলেন মালদা জেলার পুলিশ সুপার সহ পুলিশকর্মীরা৷ এদিন দুই পড়ুয়াকেই মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে৷ পুলিশকর্মীদের এহেন উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
গত সপ্তাহে পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ, হবিবপুর থানার পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হবিবপুর ব্লকের কানতুর্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলডাঙা গ্রাম পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি জানতে পারেন, গ্রামের দুই পড়ুয়া জন্ম থেকে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত৷ তাদের একজন স্থানীয় তিলাসন হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রঞ্জিত সরকার৷ বয়স ১৪ বছর৷ বাবা গৃহত্যাগী হয়েছেন। তার মা কোনোরকমে সংসার চালান৷ অপর জন গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অজয় সাহা৷ বয়স ১০ বছর৷ তার পরিবারের আর্থিক অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ৷ অথচ দুজনেই পড়াশোনায় বেশ ভালো৷
গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার অর্ণববাবু ও জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য ওই এলাকায় আদিবাসী মানুষজন সহ অন্যান্যদের জাতিগত শংসাপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যান। সেদিনই রঞ্জিত ও অজয়ের কথা ফের সামনে আসে৷ তখনই তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, দুই পড়ুয়াকে সরকারি খরচে চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে৷
এদিন অর্ণববাবু তাদের মালদা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য হবিবপুর থানার পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দেন৷ তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী এদিন রঞ্জিত ও অজয়কে মালদা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়৷
হবিবপুর থানার আইসি ত্রিদিপ প্রামাণিক জানিয়েছেন, জন্ম থেকেই রঞ্জিতের মাথার পিছনে টিউমার জাতীয় একটি বস্তু ছিল, সেটি এখন বিশালাকার ধারণ করেছে। সেই বস্তুটির প্রভাবে এখন রঞ্জিতের মেরুদন্ডও বেঁকে যাচ্ছে৷ চলাচলে অসুবিধে হচ্ছে তার৷ অন্যদিকে, জন্ম থেকে অজয় তীব্র আলোয় কিছু দেখতে পায় না৷ এমনকি দিনের আলোতেও দেখতে কষ্ট হয় তার৷ অথচ তারা দুজনেরই পড়াশোনায় সুনাম রয়েছে। এদিন পুলিশ সুপার ওই দুই পড়ুয়াকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন৷ সেই মতো এদিন দুই পড়ুয়াকেই আইসিডিএস কর্মীদের মাধ্যমে মালদা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে৷ মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত রঞ্জিত ও অজয়কে ভরতি করা হয়েছে৷
ছবিঃ ক্রিতাঙ্ক