শুভাশিস সেন
Mar 6, 2018
Updated: Feb 27, 2023
এই দিনে গ্রামের পুরুষরা সকালে স্নান করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করে গ্রামের এক প্রান্তে মারাংবুরু-র উদ্দেশ্যে হাঁড়িয়া ও মুরগি উৎসর্গ করে৷তারপর সেই মুরগি রান্না করে গ্রামের সকলে মিলে খিচুড়ি বানিয়ে খাওয়াদাওয়া করে দিনের শেষে ‘গড়’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সহরায়-এর শুভ সূচনা ঘটে৷
এই দিনে গ্রামের বাড়িতে প্রয়াত পূর্বপুরুষদের বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়৷বাড়িতে আত্মীয় পরিজনদের ‘সান্দিশ’ সহ আগমন ঘটে৷এই দিনে মূলত আত্মীয় পরিজনদের নিয়েই খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়ে থাকে৷
এই দিনে বাড়ির গৃহপালিত পশুর বন্দনা করা হয়ে থাকে৷ গ্রামের পুরুষরা এই দিনে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গৃহপালিত পশুদের বিন্তি, বাঁঘেড় (একপ্রকার বন্দনা) দ্বারা ‘জাগাও’ করে৷গৃহপালিত পশুদের তেল ও সিঁদুর মাখানো হয়৷
এই দিনটি হল সহরায় উৎসবের সবচাইতে আনন্দের দিন৷এই দিনে গ্রামের পুরুষ ও মহিলারা একসঙ্গে প্রত্যেকের বাড়িতে হাজির হয়৷সেখানে চলে খাওয়াদাওয়া এবং ধামসা ও মাদলের সহযোগে নাচ ও গানে প্রত্যেকে মেতে ওঠে৷
এই দিনটি মাছ খাওয়ার দিন৷প্রত্যেক বাড়িতে মাছ রান্না করে খাওয়া হয়৷সন্ধ্যাবেলায় হয় সমবেত নাচ ও গান৷
ঐতিহাসিকভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনে গ্রামের পুরুষরা তিরধনুক ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে শিকারের উদ্দেশ্যে বের হয়৷শিকার সাঙ্গ হলে গ্রামের একস্থানে কলাগাছ পুঁতে সেখানে তেলের পিঠে রেখে চলে কলাগাছকে নিশানা করে তিরবিদ্ধ করার কাজ৷দিনের শেষে শিকার করা মাংস রান্না করে খাওয়াদাওয়ার মধ্য দিয়ে সহরায় পরবের পরিসমাপ্তি ঘটে৷
আদিবাসী রিক্রিয়েশন ক্লাবের প্রভাত কিসুক বলেন যে, যদিও শহরে থেকে ছয়দিনের উৎসব পালন করা সম্ভব নয়৷ শেষদিনের সাকরাত অনুষ্ঠানটিও শহরে করা সম্ভব হয় না৷কিন্তু সমস্ত পরিবারগুলি একত্রে মিলিত হয়ে নাচ গান ও খাওয়াদাওয়া করে আনন্দে মেতে ওঠে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন