আমাদের মালদা ডিজিট্যাল

Oct 19, 2019

নদী পার করে দুই জেলার ভক্তের ঢল বলরামপুরের সুপ্রাচীন মনসা পুজায়

Updated: Aug 12, 2020

হাজার ছয় হাঁসের ডিম জোড়ো হয়েছে বলরামপুরের মনসা পুজায়

চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত বলরামপুর গ্রামের মনসা মন্দির প্রায় ২৫০ বছরের পুরোনো। শুক্রবার থেকে এই মন্দিরে মনসার পুজোর সূচনা হয়েছে। যদিও মনসা গান শুরু হয়েছে তারও বেশ কিছুদিন আগে। এখানে মনসা প্রতিমার পাশে শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতীর মূর্তির সাথে থাকেন হাতির পিঠে চড়ে চাঁদ সদাগরও। প্রতি বছর আশ্বিনের সংক্রান্তি তিথিতে মহানন্দা নদীর তীরে চারদিন ধরে মনসা মেলা অনুষ্ঠিত হয়। পুজো দিতে ভক্তদের ঢল নেমেছে মন্দির প্রাঙ্গণে। উত্তর দিনাজপুর জেলার ভক্তরাও নৌকায় নদী পার হয়ে মা মনসার পুজো দিতে এসেছেন এই মন্দিরে। আনুমানিক ২০০ পায়রা ও ছাগল বলি হয় এই পুজোর দিনে। ভক্তরা মানত করে এখানে হাঁসের ডিম দিয়ে। প্রায় ৩০ হাজারেরও বেশী জনসমাগম ঘটে এই মেলায়।

দুর্গাপুজো কিংবা কালীপুজো হয় নি কোনদিন এই গ্রামে…

এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে লৌকিক বিশ্বাস ও বহু জনশ্রুতি। মন্দিরটি প্রাচীন ইতিহাসের এক অনন্য নিদর্শন। মন্দিরের পঞ্চাশ মিটারের মধ্যে রয়েছে একটি মসজিদ। মন্দিরের পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ ও মসজিদের আজানের ধ্বনি মিলেমিশে তৈরি হয় সম্প্রীতির এক অনবদ্য সম্মিলিত সুর। দুই সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে মেলাটি হয়ে ওঠে সম্প্রীতির মিলন মেলা। এই গ্রামে ৪০০ মুসলিম ঘরের পাশাপাশি ১৫০ হিন্দুদের বাড়িও আছে। দুর্গাপুজো কিংবা কালীপুজো হয় নি কোনদিন এই গ্রামে। এই মেলার মিলিতভাবে আনন্দ করতে দেখা যায় দুই সম্প্রদায়ের মানুষকেই।

মধ্যরাতে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে মহানন্দাতেই

হাঁসের ডিম দিয়ে মানত করার চল থাকায় প্রতিবছর গড়ে ৬ হাজার ডিম জড়ো হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। মেলা কমিটি সূত্রে জানা যায়, শনিবার মধ্যরাতে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে মহানন্দাতেই। তবে মেলা চলবে আরও বেশ কিছুদিন। এই মেলাকে কেন্দ্রকে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

ছবি ও ভিডিয়োঃ উজির আলি