নিজস্ব প্রতিবেদন
Dec 28, 2017
১৫১৩ সালে তখন গৌড়ের সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ৷ঠিক সে সময়েই রামকেলিতে এসেছিলেন ভক্তি আন্দোলনের পুরোধা শ্রীচৈতন্যদেব৷ তিনি হোসেন শাহর দুই উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী সাকর মল্লিক ও দবিরখাসের সঙ্গে মিলিত হন৷সম্পর্কে সাকর ও দবিরখাস দুই ভাই৷এই দু’জনকে ভক্তি আন্দোলনে যুক্ত করে সনাতন ও রূপ নামকরণ করেন চৈতন্য মহাপ্রভু৷ এমনকি পুরাতন মালদার মাধাইপুরের মন্দিরে শ্রদ্ধার জায়গা করে নিয়েছেন দুই ভাই৷
নীলাচল থেকে বৃন্দাবন যাওয়ার পথে রামকেলি এসেছিলেন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু৷রূপ-সনাতন অধ্যায় তখনকারই৷ রামকেলিতে চৈতন্যদেবের অবস্থান এই অঞ্চলকে গুপ্ত বৃন্দাবন নামে পরিচিতি দিয়েছে৷বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে এখানেই আবার মাতৃ পিণ্ডদানের আয়োজন হয়৷বিহার-ঝাড়খণ্ড সহ দূরদূরান্তের মানুষ পিণ্ডদানের উদ্দেশ্যে গৌড়ে আসেন৷ কিন্তু প্রচারের আলোয় সেভাবে না আসায় রামকেলি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি৷ রামকেলির মতোই ইতিহাসের বুক থেকে জেগে আছে গৌড় নগরীর সুলতানি স্থাপত্যগুলি৷ ফিরোজ মিনার, চিকা মসজিদ বা লোটন মসজিদের অপরূপ স্থাপত্য যে যুগের বৈভবকে ব্যক্ত করে৷ মহদিপুরে বাংলাদেশ সীমান্তে গৌড়ের প্রাচীন প্রাচীর আজও মাথা উঁচু করে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে৷ প্রাচীর সেই প্রাচীরের মাথাতেই বর্তমানে আবার বিএসএফের নজরদারি কুঠির অবস্থান৷ ওয়াঘা সীমান্তের মতো মহদিপুরেও পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা যায় সরকারের সদিচ্ছা থাকলে৷
১৫১৩ থেকে ১৭৯৪-এ পৌঁছে মালদার সঙ্গে জড়িয়ে যায় উইলিয়াম কেরির নামও৷ ইংল্যান্ডের নর্দাস্পটনশায়ারের কেরি ছিলেন একাধিক ভাষায় পারদর্শী৷ দিনেমার জাহাজে চড়ে কলকাতায় পৌঁছে যান তিনি৷ তারপর নীলকুঠির ম্যানেজারের চাকরি নিয়ে আসেন মালদার মদনাবতীতে৷ এখানেই বাংলা ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ শুরু করেন তিনি৷ সেই বাংলা বই ছাপার জন্য ১৭৯৮ সালে একটি মুদ্রণযন্ত্র কিনে মদনাবতীতে বসিয়েছিলেন কেরি সাহেব৷অর্থাৎ বাংলায় প্রথম মুদ্রণযন্ত্র এই মালদাতেই স্থাপিত হয়েছিল৷কিন্তু কেরির স্মৃতি বিজড়িত মদনাবতীই বিস্মৃতির অন্তরালে৷ভগ্নপ্রায় নীলকুঠি বাঁচার আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছে৷ বামনগোলার বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারের উদ্যোগে অবশ্য নীলকুঠির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই শুরু হয়েছে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন