আমাদের মালদা ডিজিট্যাল

Dec 16, 2017

অন্যরাজ্যে পাচারের আগে ১০ নাবালিকা উদ্ধার

Updated: Feb 25, 2023

ভিনরাজ্যে পাচারের আগেই পুলিশের তৎপরতায় ভেস্তে গেল পাচারকারীদের ছক। ট্রেনে করে পাচারের ঠিক আগেই স্টেশনে যাওয়ার পথে দশ নাবালিকাকে উদ্ধার করল ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। উদ্ধার করা নাবালিকাদের সঙ্গে কথা বলেছেন জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিও৷

আজ সকাল ১১টা নাগাদ বেশ কিছু নাবালিকাকে মালদা শহরের সুকান্ত মোড় এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়৷ সেই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় ইংরেজবাজার থানার পুলিশ৷ ওই নাবালিকাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা পুলিশকর্মীদের জানায়, তাদের বাড়ি বিহারের কিষাণগঞ্জ থানার বাহাদুরগঞ্জ পলাশমণি গ্রামে৷ পড়াশোনার জন্য তাদের ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ সঙ্গে থাকা ৪ ব্যক্তিই তাদের ভিনরাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে৷ এরপর পুলিশ ওই ৪ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ কিন্তু তাদের কাছে ট্রেনের টিকিট ছাড়া কোনও নথিপত্র কিংবা নাবালিকাদের অভিভাবকদের সম্মতিপত্র তারা দেখাতে পারেনি৷ এরপরেই পুলিশকর্মীরা ওই নাবালিকাদের থানায় নিয়ে যান৷ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওই ৪ ব্যক্তিকেও৷

উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের সঙ্গে কথা বলেন মালদা জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন চৈতালি ঘোষ সরকার৷

গোটা ঘটনার পুলিশি তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, আটক ওই ৪ জনের নাম মহম্মদ হাসান, মহম্মদ নাকি আনোয়ার, মহম্মদ আফসার আলম ও মহম্মদ নাসের আলম৷ এদের মধ্যে হাসানের বাড়ি ছত্তিশগড় রাজ্যের দুর্গ জেলায়৷ বাকি ৩ জন কিষাণগঞ্জের বাসিন্দা৷ পুলিশি জেরায় তারা জানায়, তারা ওই ১০ নাবালিকাকে ছত্তিশগড়ের দুর্গ জেলার একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করাতে নিয়ে যাচ্ছিল৷ অভিভাবকদের সম্মতিতেই তারা ওই নাবালিকাদের সেখানে নিয়ে যাচ্ছিল৷ এর মধ্যে পাচারের কোনও বিষয় নেই৷ এদিন মালদা-সুরাট এক্সপ্রেসে তাদের রওয়ানা হওয়ার কথা৷ কিন্তু এ’সম্পর্কিত কোনও নথিপত্র তাদের কাছে না থাকায় পুলিশ আপাতত উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের অভিভাবকদের খবর পাঠিয়েছে৷ খবর দেওয়া হয়েছে কিষাণগঞ্জ থানাতেও৷

মহম্মদ নাকি আনোয়ারের দাবি, দুর্গ জেলার নেওয়াই থানা এলাকার ওমরপট্টিতে অবস্থিত আয়েষা সিদ্দিকি মাদ্রাসায় কিষাণগঞ্জের অনেক ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে৷ এই সব ছেলেমেয়েদের পরিবার ভীষণ গরিব৷ তারা দু’বেলা ঠিকমতো খেতেও পায়না৷ প্রতি বছরই তারা এলাকার গরিব ছেলেমেয়েদের ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করানোর জন্য নিয়ে যায়৷ অভিভাবকদের সম্মতিতে এই নাবালিকাদেরও তারা সেখানেই নিয়ে যাচ্ছিল৷ এই মেয়েদের বয়স ৮ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে৷ এদিন মালদা-সুরাট এক্সপ্রেসে তারা প্রথমে নাগপুর যেত৷ সেখান থেকে তাদের দুর্গ যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল৷

ঘটনার পর থানায় আসেন জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান চৈতালি সরকার। তিনি জানান,নাবালিকাদের সাথে কথা বলে তাদের সরকারি হোমে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যারা এই নাবালিকাদের পড়ার উদ্দেশ্যে ভিনরাজ্যে নিয়ে যাচ্ছিল তাদের কাছে সঠিক নথিপত্র পাওয়া যায়নি । এই নাবালিকাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান চৈতালিদেবী।

আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন